অস্তিত্ব সঙ্কটে কুমারখালীর মৃৎশিল্প

০৬ মার্চ ২০২১

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা

আগের মতো চাহিদা না থাকায়, কাঁচামালের দুস্প্রাপ্যতা ও মূল্য বৃদ্ধি আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শত বছরের ঐতিহ্য মৃৎশিল্প। বেশি টেকসই অ্যালুমেনিয়াম, মেলামাইন ও প্লাষ্টিকের দাপটে চাহিদা কমছে কম টেকসই মৃৎপণ্যের। হাতে গোনা স্থানীয় কয়েকটি পরিবার এখন তাদের পূর্বসুরীদের এই পেশাকে ধরে রেখেছেন। শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা মিলে গড়ে তুলেছেন একটি মৃৎশিল্প সমবায় সমিতি।


কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কল্যাণপুর গ্রামে এক সময় প্রায় দুই শতাধিক পাল পরিবার বসবাস করতেন, মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা পাল নামেই পরিচিত। এর মধ্যে কয়া ও ধরমপাড়ার পালরা বংশীয় পেশা ধরে রাখতে পারেনি, পেশা বদলিয়েছেন।


মৃৎশিল্পের কারিগড় সুব্রত বাইন বলেন, এই শিল্পের প্রধান উপকরণ হচ্ছে মাটি। বর্তমানে মাটি পাওয়া যাচ্ছে না, যাও পাওয়া যাচ্ছে- অধিক মূল্য দিয়ে কিনতে হচ্ছে। মটির তৈরী জিনিসপত্র সে রকম দামে বিক্রি করতে পারছি না। মাটির পাত্রের চাহিদাও আগের মত নেই। তাই অন্য কিছু করার চিন্তা করছি। তিনি জানান, এক সময় এখানকার পালেরা হাড়ি, পাতিল, কলসি, কড়াই, ব্যাংক, বিভিন্ন পিঠা তৈরীর চাঁচ, ছোট-ছোট খেলনা ইত্যাদি জিনিসপত্র তৈরি করলেও এখন শুধুমাত্র অর্ডার নিয়ে দইয়ের পাত্র, সো পিচ, ফুলের টব ও গুড়ের কোলা তৈরি করে কোন রকমের জীবিকা নির্বাহ করছেন।


এদিকে মৃৎশিল্প সমবায় সমিতি সংশ্লিষ্টরা দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানার চাক, পানির ট্যাংকি তৈরি করছেন। স্বল্প মূল্য বিক্রি করায় ব্যাপক চাহিদা এসব পণ্যের। কিন্তু আর্থিক সঙ্কটের কারণে ক্রেতাদের ঠিক মতো এসব পণ্যের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছেন সমিতি সংশ্লিষ্টরা। এই সমিতির সভাপতি বলেন, এই সমিতির মাধ্যমে মৃৎশিল্পের অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনার চেষ্ট করা হচ্ছে। টাইলস তৈরির চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আর্থিক সঙ্কটের কারনে সম্ভব হচ্ছে না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মৃৎশিল্পের অতীত ঐতিহ্য পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব, এমনটি আশা করছেন এখানকার পাল সম্প্রদায়ের মানুষেরা।


এমএস/এমকে

 

 


মন্তব্য
জেলার খবর