সাদা সেমাইয়ের দুই শতাধিক কারখানায় ব্যস্ততা বেড়েছে

১৬ এপ্রিল ২০২২

দীপক কুমার সরকার, বগুড়া প্রতিনিধি:

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে বগুড়ায় চিকন সাদা সেমাইয়ের দুই শতাধিক কারখানায় ব্যস্ততা বেড়েছে কারিগরদের। এ সেমাই অনেক সুস্বাদু হওয়ায় ও জনপ্রিয়তা থাকায় উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে এখন সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেরও বাজার দখল করেছে। তবে চলতি বছরে ময়দাসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ  সেমাই তৈরিতে খরচ বেড়েছে। ফলে গত বছরের মতো লাভ হচ্ছে না উৎপাদকদের। আর খুচরা বাজারে পড়েছে এর প্রভাব।

জানা যায়, জেলায় সবচেয়ে বেশি কারখানা রয়েছে বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়া, শহরতলীর  বেজোড়া, নিশ্চিন্তপুর, পূর্বপালশা, ঢাকান্ত, পালশা, শেরপুর উপজেলার গোপালপুর, গাড়িদহ, হামছায়াপুর ও বেতগাড়ী এলাকায়। এসব কারখানায় শ্রমিক আছে প্রায় ২ হাজার, এদের অধিকাংশই নারী। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলার শহরের বিভিন্ন মাকের্টে এ সেমাই বিক্রি শুরু হয়েছে।

শহরের ঢাকান্ত এলাকার সেমাই কারখানার ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর উৎপাদন খরচ বাড়ায় পাইকারি ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে এ সেমাই। খুচরা বাজারে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি  হচ্ছে। মজুরি বৃদ্ধি ও ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

ওই কারখানার নারী শ্রমিক মেমেনা বেগম জানায়, তারা প্রতিদিন ৩০০ টাকা মজুরি পাচ্ছে। প্রত্যেক রমজান মাসে তারা এ কাজ করে থাকে। এ মাসে অনেক সময় দিনের পাশাপাশি রাতেও কাজ করতে হয় তাদের।

জেলার শেরপুর উপজেলার আনন্দ লাচ্ছা সেমাইয়ের কারখানার মালিক হেলাল উদ্দিন জানান, রোজা শুরু হওয়ার ২ সপ্তাহ আগে থেকে কারখানায় ব্যস্ততা বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেমাই তৈরি করা হচ্ছে। তিনি জানান, চলতি বছর ২৫ কেজি ওজনের এক খাচি সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে। ভালোমানের এ সেমাই পাইকারি বাজারে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা আর খুচরা বাজারে ৬০ টাকা কেজি দাম পড়বে।

বগুড়া শহরের রাজাবাজার এলাকার সাদা সেমাই প্রস্তুতকারণ নিতাই রায় জানান, সময়মতো কারিগর পাওয়া যায় না। বেশি দামে শ্রমিক রাখতে হয়। ময়দার দাম বেড়েছে। রোদ না থাকলে সাদা  সেমাই শুকানো যায় না। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছে লোডশেডিং। এসব কারণেই সাদা সেমাইয়ের দাম কিছুটা  বেড়েছে। তিনি জানান, পাইকারি ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো কুরিয়ারের মাধ্যমে সেমাই পৌঁছানো হয়। দামের বিষয়টি শুকানো এবং সেমাইয়ের মানের ওপর নির্ভর করে।

বগুড়া চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ সহসভাপতি মাফুজুল ইসলাম রাজ জানান, বগুড়া শহর এবং শহরতলীতে দুই শতাধিক কারখানায় সাদা চিকন সেমাই তৈরি হয়ে থাকে। এ সেমাইয়ের সারাদেশে চাহিদা রয়েছে। তবে করোনার কারণে গত দুই বছর এসব কারখানার মালিক ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। এ বছর হয়তো করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে তারা।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর