সারা দেশে ডায়রিয়া প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে কলেরার টিকাদান কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। সরকারিভাবে ২৩ লাখ মানুষকে দুই দফায় মুখে খাওয়ার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাদুর্ভাব বেশি থাকা এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ টিকা দেওয়া হবে। অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আর সিদ্ধান্তের কথা আগের সপ্তাহে জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও ১ বছরের কম বয়সী শিশু ছাড়া সব বয়সী মানুষকে এ টিকা দেওয়া হবে। এ টিকাদান কর্মসূচির প্রথম ডোজ দেওয়া হবে মে মাসে আর দ্বিতীয় ডোজ জুন মাসে দেওয়া হবে।
টিকাদান কার্যক্রম প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিকা কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। রাজধানী ঢাকায় সরকারি তিতুমীর কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি। এ সময় করোনা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন জাহিদ মালেক। জানান, করোনার সময় কাটিয়ে স্বাভাবিকতায় ফিরছে সবকিছু।
জানা গেছে, ক্রমেই সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। সাধারণত এপ্রিল মাসে দেশে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। কিন্তু এ বছর মার্চের শুরুতেই আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করে রোগী। এ অবস্থায় রাজধানীতে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আইসিডিডিআর, বির চিকিৎসকসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীকে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম অধিদফতরটির নিয়মিত বুলেটিনে জানিয়েছেন, সারাদেশে মার্চে ডায়রিয়াতে ভর্তি রোগী ছিল এক লাখ ৭০ হাজার ২৩৭ জন। তিনি জানান, ডায়রিয়া হওয়ার মূল কারণ দূষিত পানি। তবে ফুড পয়জনিং ও খাবারের মান খারাপ হলেও ডায়রিয়া হতে পারে। ডায়রিয়ার জীবাণু সংক্রমণ ছাড়া ডায়রিয়া হওয়া কিছুটা অসম্ভব।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র আরো জানান, বৃষ্টি ভালো করে হয়নি। পানির স্তর নিচে রয়েছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের উপকূলীয় এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। সেই সঙ্গে নিত্যদিনের ব্যবহৃত পানি ততটা জীবাণুমুক্ত বা বিশুদ্ধ না। কাজেই কন্টামিনেশনের ( দূষণ) অন্যতম কারণ এইগুলোও। শতভাগ নিরাপদ পানি না দেওয়া গেলে ডায়রিয়ার হাত থেকে মুক্তি নেই।
ডায়েরিয়া ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, সাবানে ধোয়া হাত দিয়ে কলের মুখ বন্ধ করা হয়। সেই মুখটি বন্ধ করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত হাত জীবাণুমুক্ত থাকে। কিন্তু সেই কলের মুখ কোনো আক্রান্ত ব্যক্তি ছুঁয়ে যাওয়ার পর ধরা হলে ওই জীবাণুতে আক্রান্ত হবে। এ জীবাণুর ইনকিউবিশন পিরিয়ড দুই ঘণ্টা থেকে পাঁচ দিন।
এমকে