সারা দেশে বিশেষত রাজধানী ঢাকায় কলেরার (ডায়রিয়া) প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে কলেরার টিকাদান কার্যক্রম হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এদিকে সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওয়াসাকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ওয়াসা বলেছে, উৎপত্তি স্থলের পানিতে কোনো দূষণ নেই, তাদের লাইন থেকে বাসা-বাড়িতে লাইন নেওয়ার সময় হয়তো জীবাণু ঢুকছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিসহ নির্দেশ দেওয়ার কথা বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ সভা শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সভায় কলেরা সংক্রমণের বিষয়টি অনির্ধারিত ইস্যু হিসেবে আলোচনা হয়েছে। সেখানেই উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ওয়াসাকে অবৈধ পানির লাইন বন্ধ করারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
কলেরার টিকা প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ৭.৫ মিলিয়ন কলেরার ভ্যাকসিন দেবে বাংলাদেশকে। আগামী মে মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে এগুলো পেয়ে যাবো, এরপর টিকা দেওয়া শুরু হবে।
ওদিকে ক্রমেই সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। সাধারণত এপ্রিল মাসে দেশে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা গেলেও এ বছর মার্চের শুরুতেই আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করে রোগী। রোগী বৃদ্ধি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এর আগে অধিদফতরটির নিয়মিত বুলেটিনে জানিয়েছেন, সারাদেশে মার্চে ডায়রিয়াতে ভর্তি রোগী ছিল এক লাখ ৭০ হাজার ২৩৭ জন। রোগটির সংক্রমণ ও প্রতিরোধ প্রসঙ্গ জানান, ডায়রিয়া হওয়ার মূল কারণ দূষিত পানি। তবে ফুড পয়জনিং ও খাবারের মান খারাপ হলেও ডায়রিয়া হতে পারে। ডায়রিয়ার জীবাণু সংক্রমণ ছাড়া ডায়রিয়া হওয়া কিছুটা অসম্ভব। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র আরো জানান, বৃষ্টি ভালো করে হয়নি। পানির স্তর নিচে রয়েছে। গ্লোবাল ওয়ার্মিং ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশের উপকূলীয় এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। সেই সঙ্গে নিত্যদিনের ব্যবহৃত পানি ততটা জীবাণুমুক্ত বা বিশুদ্ধ না। কাজেই কন্টামিনেশনের ( দূষণ) অন্যতম কারণ এইগুলোও। শতভাগ নিরাপদ পানি না দেওয়া গেলে ডায়রিয়ার হাত থেকে মুক্তি নেই।
এমকে