কমেছে টাকার মান

১৫ মে ২০২২

আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে, বিশেষত এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকুর) দায় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। মার্চ ও এপ্রিল- এ দুই মাসে এ দায় পরিশোধে ব্যয় হয়েছে ২২৪ কোটি মার্কিন ডলার। আমদানি ব্যয় মেটাতে ডলারের চাহিদা বাড়ছে। এতে কমেছে টাকার মান। গত ৯ মে (সোমবার) মার্কিন ডলারের বিপরীতে ২৫ পয়সা কমিয়ে টাকার মূল্য ৮৬ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। টাকার মান কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কথাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগেও গত ২৭ এপ্রিল মার্কিন ডলারের বিপরীতে ২৫ পয়সা কমিয়ে টাকার মান ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করেছিল ব্যাংকটি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত দরে ডলার লেনদেন করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। কারণ বাজারে লেনদেন হচ্ছে এর চেয়ে দুই থেকে তিন টাকা বেশি দরে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কারণ আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনেই লেনদেন করছে ব্যাংকগুলো। বেশিরভাগ ব্যাংক  ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সার সঙ্গে ৪ টাকা যুক্ত করে ৯০ টাকায় লেনদেন করছে। গত দুই মাসে যে ২২৮ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে, সেটা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। অর্থনীতি দাঁড়ানোর মূলধনী যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামাল আমদানি বাড়ার সঙ্গে জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে আমদানি ব্যয় বেড়েছে বলে জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, বছরখানেক আগেও সামগ্রিক আমদানি দায় পরিশোধে  ব্যয় হতো সাড়ে ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার। অথচ এখন ব্যয় হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) এ দায় পরিশোধে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হলেও গত ফেব্রুয়ারিতে সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ বিলিয়ন ডলার। তথ্য অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার পর থেকেই দেশে আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার আগে মাসে আমদানি খাতে গড়ে ৪ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ হতো। করোনার মধ্যে সেটা কমে ৩ থেকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়। কিন্তু চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই আমদানি বেড়ে যায়।  

এদিকে ব্যাংকাররা যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে চাহিদা অনুযায়ী ডলার মিলছে না। তাই সংকট মেটাতে বাধ্য হয়ে বেশির ভাগ ব্যাংক  কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে আসছে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার রিজার্ভ থেকে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি খরচের জোগান দিতে ব্যাংকগুলোকে ডলার সরবরাহ করছে। এভাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে প্রায় ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জোগান দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে। বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে সর্বোচ্চ ৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর