বাজারে কমবেশি সব পণ্যের দাম বেড়েছে, দাম বাড়েনি— এমন পণ্য পাওয়া দুস্প্রাপ্য। কিছু বেড়েছে মাসের ব্যবধানে, আবার কোনো কোনোটি বেড়েছে বছরের ব্যবধানে। বৃদ্ধির হার কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে শতভাগ, দ্বিগুনও হয়েছে। এতে নাভিশ্বাস উঠছে ভোক্তাদের। দাম বৃদ্ধির পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি যেমন আছে, তেমনি ব্যবসায়ীদের কারসাজিও আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে দেশের বাজারে দ্রব্যের দাম কেন বেড়ে যাচ্ছে, কীভাবে দাম কমানো যাবে— এসব বিষয়ে একটা সামারি করাসহ করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশ দেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে হবে তাদের।
অন্যদিকে উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশবাসী- সবাইকে ‘কৃচ্ছতাসাধন’ বা সব পণ্যের ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, এ বিষয়ে একটু সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
বাজার তথ্য বলছে, ভরা মৌসুমেও বাজারে কমবেশি সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। নাজিরশাইল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে। ৫৬-৫৮ টাকার মিনিকেট কিনতে এখন ৬২ থেকে ৬৮ টাকা খরচ হচ্ছে। মোটা চালেও ৫০ টাকার নিচে মিলছে না। রাশিয়া-ইউক্রেনের পর ভারত থেকে গম আমদানি বন্ধের খবরে নতুন করে বেড়েছে আটার দাম। প্যাকেটজাত এক কেজি আটা ৫০ টাকা আর খোলা আটা ৪৪ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এখন। কিছুদিন আগেও আটা ৩৬-৪৫ টাকায় পাওয়া যেতো। টিসিবির হিসাবে, এক মাসের ব্যবধানে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়েছে খোলা আটার দাম । এদিকে আটার দাম বাড়ায় নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি পড়ছে হোটেল-রোস্তোরাঁ ও বেকারি পণ্যের ওপরও। সব হোটেল রেস্তোরাঁতেই এখন পরোটার দাম বেড়েছে, কিংবা কমেছে পরোটার আকার। কেউ দাম বাড়িয়ে, কেউ আকারে ছোট করে বিক্রি করছে পুরি, সিঙ্গারা, পেঁয়াজুসহ বিভিন্ন খাবার। বিভিন্ন ধরনের সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮২ টাকা থেকে ১৯৮ টাকায়। আটা-তেলের দামের প্রভাব পড়েছে বেকারি পণ্যে। এসব পণ্যের দাম ৫ থেকে ১০ শতাংশ বেড়েছে। ভারত থেকে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করায় ৩০-৩৫ টাকা থেকে বেড়ে এখন ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। গোখাদ্যের দাম বাড়ায় বেড়েছে ডিম, দুধ ও মাংসের দামও। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় কৃষিজাত পণ্যেরও দাম বেড়েছে। দ্রব্যের দাম বাড়ায় সরাসরি প্রভাব পড়ছে জীবনযাত্রায়। সংসার খরচ কমিয়ে কোনো মতে খেয়ে পড়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন নির্দিষ্ট আয়ের অনেকেই।
এমকে