দ্রব্যমূল্যের প্রভাবে দরিদ্র ২১ লাখ

০৬ জুন ২০২২

দ্রব্যমূল্যের প্রভাবে দেশে দরিদ্র হয়েছেন ২১ লাখ মানুষ। তারা টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। খাওয়া কমিয়ে কাজ বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া করোনার পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় থাকলেও কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থান হচ্ছে না।

জিনিসপত্রের দাম বাড়ার পেছনে ৬২ শতাংশ মানুষ দুর্বল ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন। আর অনেকেই দায়ী করেছেন  সরবরাহের ঘাটতি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধিকেও। পরিস্থিতি উত্তরণে ৬৯ ভাগ মানুষ মনে করছেন, সুশাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। আর  ৩৬ শতাংশ মানুষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বিস্তারের কথা বলেছেন।

বেসরকারি সংগঠন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (বিআইজিডি) একটি গবেষণালব্ধ ফলে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রোববার (৫ জুন)  ভার্চুয়াল সভায় ফলটি জানানো হয়।  মূল্যস্ফীতি, খাপ খাওয়ানো ও পুনরুদ্ধারের প্রতিবন্ধকতা শীর্ষক ৭দিনের এ গবেষণা চলে গেল মে মাসে, ১৪ থেকে ২১ মে পর্যন্ত। এতে গ্রাম ও শহর মিলে মোট ৩ হাজার ৯১০ মানুষ অংশ নেয়।

গবেষণালব্ধ তথ্য বলছে,  এখন আগের চেয়ে চাল কম কিনছে ২৭ শতাংশ পরিবার। নিম্নমানের চাল কিনছে ৩৬ শতাংশ পরিবার। দুধ কেনা কমিয়েছে ৪৭ শতাংশ মানুষ, বাদ দিয়েই দিয়েছে ২০ শতাংশ পরিবার। আর মাছ কেনার পরিমাণ কমিয়েছে ৭৩ শতাংশ মানুষ। শহরে বস্তিবাসীর ৫ শতাংশ মাসে অন্তত একদিন  অভুক্ত দিন কাটিয়েছে। গ্রামে এ অবস্থা ৩ শতাংশ। শহরে ২১ এবং গ্রামে ১৩ শতাংশ পরিবার অন্তত একবেলা কম খেয়েছে। খাদ্যবহির্ভূত অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাতেও ব্যয় কমিয়ে দিচ্ছেন মানুষ। ১৫ শতাংশ সন্তানদের পেছনে ব্যয় কমিয়েছে, বিশেষত টিউশনি পড়ানো বন্ধ করেছে ১০ শতাংশ।  আর ওষুধ কেনা কমিয়েছে ১১ শতাংশ।

তথ্যানুযায়ী, করোনার আগের সময়ের চেয়ে এখন মানুষের আয় কমেছে গড়ে ১৫ শতাংশ। গ্রামের তুলনায় শহরে বেশি, শহরে ২৫ শতাংশ আর গ্রামে ১ শতাংশ। শুধু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষের আয় শহরে  ৮ ও গ্রামে ৩ শতাংশ কমেছে।

সভায় আরো জানানো হয়, ২০১৭ সালে দরিদ্র মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১১৭ টাকা। প্রথম লকডাউনের পরবর্তীতে সেটা ৬৫ টাকায় দাঁড়ায়। যদিও পরে বেড়েছে, গেল জানুয়ারিতে হয় ১০৫ টাকা। এখন সেটা কমে ৯৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে। গত জানুয়ারি-মে পর্যন্ত সময়ে আয় কমেছে ৬ শতাংশ। প্রভাবটা বেশি পড়েছে শ্রমিকদের ওপরে। কৃষি ও পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টরা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারলেও রিকশাচালক, কারখানা শ্রমিক ও গৃহকর্মীর ওপর এর মারাত্মক প্রভাব। করোনার আগে শহরের ৬ শতাংশ  কর্মহীন থাকলেও এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ১০ শতাংশ। আর গ্রামের  ৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯ শতাংশ হয়েছে কর্মহীন মানুষ। উদ্ভুত পরিস্থতিতে মানুষ এখন ঋণও নিতে চায় না। কারণ হিসেবে  ঋণ পরিশোধের অনিশ্চয়তার কথা বলেছেন তারা।

এমকে

 

 

 

 


মন্তব্য
জেলার খবর