বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যেখানে বিশ্বে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আমেরিকা, ইংল্যান্ডের মতো দেশেও মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। সেখানে বর্তমান সরকার দেশে ভর্তুকি দিয়ে দ্রব্যমূল্য যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রিজার্ভের টাকা ভেঙে ভেঙে বিদ্যুতের, গ্যাস, কৃষির ও স্বাস্থ্যের জন্য ভতুর্কি দিয়ে যাচ্ছে। বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে ভর্তুকি দেওয়ার এ কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৭ জুন) রাজধানী ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বর্তমান বৈশ্বিক সংকট তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইংল্যান্ডের মানুষ তিন বেলা খেলেও এখন একবেলা খাবার বাদ দিয়েছে। সেখানে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে- কেউ এক লিটারের বেশি ভোজ্যতেল কিনতে পারবে না। আমেরিকায় মূল্যস্ফীতি যেখানে ১ থেকে দেড় শতাংশ হতো না, সেখানে ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। প্রত্যেক জায়গায় জিনিসের দাম বেড়ে গেছে, মানুষ দুরবস্থায় আছে। কত মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশে মানুষকে খাদ্য, টিকা, ওষুধসহ সবকিছু দিয়ে যেতে পারছি। কৃষিতে এগিয়ে থাকায় দেশের মানুষ ভালো আছে।
প্রশ্ন রেখে শেখ হাসিনা বলেন, তারপরেও কেউ যদি গোলমাল করার চেষ্টা করে, এতে দেশটা একেবারে স্থবির হয়ে গেলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে? বিশ্বব্যাপী খাদ্যাভাব, খাদ্য মন্দার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। নিজেদের মাটি আছে, মানুষ আছে- ফসল ফলাতে হবে। নিজেদের খাবারের ব্যবস্থাটা অন্তত নিজেরা করবো।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সবাইকে মিতব্যয়ী ও খাদ্য অপচয় না করার আহবান জানান। বলেন, সবাই সঞ্চয় করুন। সবতো আর সরকার করতে পারবে না। নিজেকেও করতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তাড়াতাড়ি না থামলে এর প্রভাবে আমদানি ব্যয় বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তাড়াতাড়ি থামবে বলে মনে হয় না, জিনিসের দাম বাড়বেই।
প্রধানমন্ত্রী নিত্যপণ্যের দাম কমানো এবং বেতন বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করার ব্যাপারে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আন্দোলনের কারণে কারখানা বন্ধ হলে চাকরি চলে যাবে। তখন বেতন আর বাড়বে না, বেতনহীন হয়ে যেতে হবে। এটাও মনে রাখতে হবে।
দেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরই দেশে স্থিতিশীলতা এসেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তার সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গণতান্ত্রিক ধারাও অব্যাহত আছে। এ জন্য দেশের উন্নতি হয়েছে। তারপরও বার বার প্রচেষ্টা চালানো হয় সরকারকে উৎখাতই করতে হবে।
এমকে