চালু হচ্ছে সর্বজনীন পেনশন

১০ জুন ২০২২

একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় দেশের বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জাতীয়ভাবে একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের কথা ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতিহারে বলেছিল আওয়ামী লীগ। সেই পেনশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে আগামী অর্থবছরেই। বিষয়টি জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপনকালে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী সংসদে জানান, নির্বাচনি ইশতেহারের এ ঘোষণা বাস্তবায়নে ২০১৫ সালে সরকারের জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রে একটি ব্যাপকভিত্তিক সমন্বিত অংশগ্রহণমূলক পেনশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনকালে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের ঘোষণা দেওয়া হয় এ সংসদে।

এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে এ বিষয়ে  সাংবাদিকদের  সঙ্গে কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, আগামী ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই এ ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী বাংলাদেশি যে কোনো নাগরিক এ সুবিধার আওতায় আসবেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ রাখা হচ্ছে। ওই দিন তিনি বলছিলেন, নির্ধারিত হারে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন ‍সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রথমে ঐচ্ছিক ও পরবর্তীতে বাধ্যতামূলক সবারই একটি পেনশন অ্যাকাউন্ট থাকবে, সেখানেই চাঁদা জমা দিতে হবে।

অর্থমন্ত্রী জানান, এ ব্যবস্থাটি সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে। আর নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। এটা বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ লাভবান হবে। শেষ বয়সে যখন কেউ দেখার থাকবে না, তখন এ পেনশন ব্যবস্থা কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছিলেন, জমাদানের নির্ধারিত চাঁদা আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে। একজন নাগরিক কত টাকা দেবেন এবং বিনিময়ে সরকার তাকে কত টাকা দেবে- সেটা পেনশন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি নাগরিকের একটি পেনশন অ্যাকাউন্ট থাকবে। ফলে চাকরি পরিবর্তন করলেও অ্যাকাউন্টটি অপরিবর্তিত থাকবে। দেশে বসবাসকারীদের জন্য মাসিক  আর প্রবাসীদের জন্য ত্রৈমাসিক সর্বনিম্ন চাঁদা নির্ধারিত থাকবে।। নির্দিষ্ট সময়ে চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে সাময়িক বন্ধ থাকবে অ্যাকাউন্টটি। পরবর্তীতে জরিমানাসহ বকেয়া দিলে সেটা চালু হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, পেনশনের নির্ধারিত বয়স ৬০ পূর্ণ হলে নির্ধারিত হারে পেনশন পাওয়া শুরু হবে, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত পাওয়া যাবে। তবে চাঁদা দানকারী ৭৫ বছর হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করলে তার নমিনি পেনশন পাবেন। নমিনি পাবেন ৭৫ বছর পর্যন্ত। চাঁদা জমাকারীর অবর্তমানে এককালীন টাকা তোলার কোনও সুযোগ থাকবে না। তবে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পেনশনের ৫০ ভাগ ঋণ হিসেবে উত্তোলন করা যাবে। কোনও জমাকারী ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করলে তার নমিনিকে জমাকৃত অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর