বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ার শেরপুরের খামারকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন মহসিনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত নালিশ দিয়েছেন তারই পরিষদের মহিলা মেম্বার (সংরক্ষিত)মোছা. হাবিবা আক্তার শিউলি। এক পত্রে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একই রাস্তার দুইটি প্রকল্প, রাস্তা পাকাকরণের কথা বলে ইট তুলে আত্মসাৎ, প্রকল্পের কাজ না করে টাকা উত্তোলন, উদ্যোক্তাকে বিনা কারণে বাদ নিজের শ্যালককে নিয়োগ দেওয়া, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
১২ জুন দেওয়া অভিপত্র সুত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন মহসিন ২০২১-২২ অর্থ বছরের টি আর কাবিখা প্রকল্পের বিশেষ বরাদ্দ নিয়ে পারভবানীপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহর বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত ইটের সোলিংয়ের কাজ করছেন। একই অর্থবছরে ওই রাস্তা দেখিয়ে বগুড়া জেলা পরিষদ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু কাজ না করে সেই টাকা এক ইউপি সদস্যের ব্যাংক একাউন্টে রেখেছেন। এদিকে রাস্তা পাকাকরণের কথা বলে শুভগাছা-বেড়েরবাড়ি রাস্তার শুভগাছা জাঙ্গালপাড়া এলাকার ৪শ মিটার রাস্তার ইট তুলে নিয়েছেন। সেই ইট দিয়ে পারভবানীপুর আব্দুল্লাহ বিন ফয়েজ ঈদগাহ মাঠের রাস্তার সোলিংয়ের কাজ করেছেন। অথচ ওই কাজের জন্য কাবিটার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। ২০২১-২২ অর্থবছরের ৩য় পর্যায়ের টিআর প্রকল্পের বোয়ালমাড়ি গ্রামে তিনমাথা গোল চত্বর নির্মাণ না করে ৫৬ হাজার ৩শ ৪৩ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে অতিরিক্ত ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আদায় করলেও সরকারি কোষাগারে জমা দেননি। ২০১০ সাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারে নাজমুল ইসলাম উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পর আব্দুল মোমিন মহসিন তাকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন। তার জায়গায় শেরপুর পৌর শহরের বাসিন্দা ও তার শ্যালক মো. মাসুদ করিমকে উদ্যোক্তা হিসেবে নিয়োগ দেন। কর্ম হারিয়ে নাজমুল ইসলাম স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এখন। এদিকে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর (ইজিপিপি) শ্রমিক নিয়োগে দরিদ্র শ্রমিকদের বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান তার বাড়ির ৩জন কাজের লোককে নিয়োগ দিয়েছেন। ইউনিয়নের সব কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পের কাজ শ্রমিকদের দিয়ে করার কথা থাকলেও অতিরিক্ত মুনাফার আশায় স্কেভেটর মেশিন দ্বারা প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করেছেন। ফলে দরিদ্র কর্মজীবি মানুষ কর্মহীন হলেও চেয়ারম্যানের পকেট ঠিকই ভারি হয়েছে।
এ ব্যাপারে খামারকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মোমিন মহসিন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মাত্র। বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউল হক বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দীপক কুমার সরকার/এমকে