বিসিকে ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও ঋণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

১৫ জুন ২০২২

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক) পঞ্চগড়ের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের নামে ঋণ তুলে সে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে পুলিশ সুপার বরাবর পত্র দিয়েছেন বাহারাম আলী ও মজিবুল ইসলাম নামের দুই ভুক্তভোগী। সোমবার (১৩ জুন) এ পত্র দেওয়া হয়। অভিযুক্তরা হচ্ছেন- বিসিকের উপব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ জোনায়েদ , শিল্প কর্মকর্তা মেরাজুল ইসলাম ও আব্দুল মালেক। এদিকে তাদের বিরুদ্ধে ঋণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে অনুসন্ধানে।

অভিযোগ, বাহারাম আলীর নামে ৫ লাখ টাকা ঋণ অনুমোদন হলে অভিযুক্তরা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বাহারাম আলীর কাছে থেকে ঋণের চেকের পাতায় স্বাক্ষর নেয়। পরে এনআরবিসি ব্যাংক দেবীগঞ্জ শাখা থেকে অনুমোদিত টাকা উত্তোলন করে নেয় তারা। টাকা না দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন। এদিকে মজিবুলের স্ত্রী নুরমা বেগমের নামে ৫ লাখ টাকা ঋণ অনুমোদন হলে ইসলামি ব্যাংক দেবীগঞ্জ শাখায় তার নামীয় অ্যাকাউন্টের চেকের পাতায় স্বাক্ষর নেয় অভিযুক্তরা। সেই দিয়ে ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করে তারা। আর এ ঋণ অনুমোদনের জন্য ভুক্তভোগীর কাছে থেকে ৩২ হাজার টাকা উৎকোট নিয়েছেন তারা।

অফিস সূত্রে জানা যায়, করোনাকালীন সংকট কেটে উঠতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যবসায়ীদের জন্য বিসিকের নিজস্ব তহবিল থেকে এক কোটি ২১ লাখ ও প্রণোদনা ঋনের আওতায় এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, উপব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ জোনায়েদ ও জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার সাবেক ছিটমহলের খারিজা ভাজনি ভাওলাপাড়া এলাকার আব্দুল মালেক পরস্পরে পূর্ব পরিচিত ও দূরসম্পর্কের আত্মীয়। এ কারণে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মালেকের স্ত্রী শিউলী বেগম ৫ লাখ, ভাই আহিনুর ৫ লাখ, আশিকুর রহমান ৪ লাখ, ভাইয়ের বউ আফরিন নাহার আরিফা ৫ লাখ, শ্যালক সাজ্জাত হোসেন ৫ লাখ, চাচাতো ভাই রশিদুল ৩ লাখ, মামাত ভাই রেজাউল ৫ লাখ- এভাবে মালেকের ২০ জনেরও অধিক আত্মীয়-স্বজনের নামে ঋণ দিয়েছেন তিনি। এ ঋণ গ্রহীতাদের কেউ রয়েছে জেলার বাইরে, কেউ কিনেছেন শহরে জমি। এতে সরকারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কোনোটিই সফল হচ্ছে না। এদিকে দেবীগঞ্জ উপজেলার ওকড়াবাড়ি এলাকার আব্দুল কাদের তার ছেলে মোফাজ্জল ও মিজানুরের নামে ঋনের আবেদন করেছেন ২ লাখ করে ৪ লাখ। তার অনুকূলে ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে২ লাখ টাকা, কিন্তু সে টাকা পাননি বলে জানিয়েছেন মিজানুর। কারণ আগেই ঋণের চেকের পাতায় স্বাক্ষর নিয়েছিলেন উপব্যবস্থাপক। একই এলাকার শাহানাজ বেগমের নামে ৫ লাখ টাকা ঋণ অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু ভোটার আইডি কার্ড ছাড়া কিছুই নেয়নি জোনায়েদ স্যার, জানান শাহানাজের স্বামী ফজলু। স্যার নিজেই জিম্মাদার হয়েছেন। তিনিই কিস্তি পরিশোধ করছেন- যোগ করেন ফজুল।

এবিষয়ে উপব্যবস্থাপক শাহ্ মোহাম্মদ জোনায়েদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,নিয়ম মেনে ঋণ বিতরন করা হয়েছে।

মো.সম্রাট হোসাইন/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর