সুইস ব্যাংকে আমানত বেড়েছে বাংলাদেশিদের

১৭ জুন ২০২২

দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ যখন দেশে ফেরত আনার সুযোগ দিতে যাচ্ছে সরকার, তখন সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক- সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) তাদের এক প্রতিবেদনে জানালো, দেশটির স্থানীয় মুদ্রায় গত একবছরে বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ তাদের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন। আর এ টাকা এ যাবৎ কালের মধ্যে সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড-২০২২’ শিরোনামে বার্ষিক এ  প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্যাংকটি। তবে কোনো বাংলাদেশি তার নাগরিকত্ব গোপন করে অর্থ জমা রাখলে সেই টাকা এ হিসাবে যোগ হয়নি। তাছাড়া গচ্ছিত রাখা স্বর্ণ বা মূল্যবান সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমানও যোগ হয়নি এ প্রতিবেদনে।

সাধারণত সুইস ব্যাংক অর্থের উৎস গোপন রাখে। গ্রাহকদের নাম-পরিচয়ও প্রকাশ করে না। এ কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা সেখানকার বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমা রাখেন। শুধু বাংলাদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও দেশটিতে অর্থ জমা রাখেন।

দীর্ঘ দিন ধরেই বিশ্বের ধনীদের অর্থ গোপনে গচ্ছিত রাখার জন্য খ্যাতি রয়েছে দেশটির। সবার ধারণা অবৈধ আয় আর কর ফাঁকি দিয়ে জমানো টাকা জমা রাখা হয় এ দেশের ব্যাংকে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনার সুযোগ রাখা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে।

এসএনবি’র ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁর বিনিময়মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৫.৭০ টাকায় হিসাব করলে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি। এক বছর আগে আমানতের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা (৫৬ কোটি ২৯ লাখ ফ্রাঁ)। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আমানত বেড়েছে ২ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। ২০২০ সালে আমানতের পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঁ। তার তিন বছর আগে- ২০১৭ সালে ছিল ৬৬ কোটি ১৯ লাখ সুইস ফ্রাঁ, ২০১৮ সালে কিছুটা কমেছিল- জমা হয়েছিল ৬২ কোটি সুইস ফ্রাঁ। পরের বছর ২০১৯ সালে এসে দাঁড়ায় ৬০ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঁ। তবে প্রতিবেদন থেকে পাচার অর্থ সম্পর্কে কোনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি, এমনকি আমানত হিসাবে কার কত অর্থ আছে তা-ও জানা যায়নি। যদিও মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি বলছে,  বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৭১ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর