বগুড়ায় প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল

১৯ জুন ২০২২

দীপক কুমার সরকার, বগুড়া প্রতিনিধি:

উত্তরের পাহাড়ী ঢলে ও বৃষ্টিপাতে বগুড়া সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়া শুরু করেছে।  ২০০ বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। ২৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আঙিনায় পানি উঠেছে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাসকিয়া জানিয়েছেন, রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত যমুনা নদীর সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৯৭ সেন্টিমিটার। দুপুর ১২টায় সেটা বেড়ে দাড়িয়েছে ১৭ সেন্টিমিটার। সকালের এ সময়ে বাঙালি নদীতে পানির উচ্চতা ছিল ১৫. ৭৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১৫.৮৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত এলাকার মধ্যে আছে সারিয়াকান্দি উপজেলার দক্ষিণ শংকরপুর, পূর্ব ধারাবর্ষা, পশ্চিম ধারাবর্ষা, কেষ্টিয়ারচর, কোমরপুর, চানবাড়ী, মাঝবাড়ী, কালাইহাটা, পৌতিবাড়ী, চর মাঝিরা, হাতিয়া বাড়ী, কালিয়ান, আগ বোহাইল, নিজ বোহাইল, আওলাকান্দি, ভাংগারছেও উত্তর বেণীপুর, দক্ষিণ বেণীপুর, মিঠনেরপাড়া, কাজলা, বাওইটোনা, কুড়িপাড়া, পাকেরদহ, উত্তর টেংরাকুড়া, দক্ষিণ টেংরাকুড়া, পাকুড়িয়া, ময়ুরেরচর, ট্যাকামাগুড়া, চর ঘাগুয়া, জামথল, বেড়াপাঁচবাড়ীয়া ফাজিলপুর, বহুলাডাঙ্গা, চালুয়াবাড়ী, আওচারপাড়া, সুজালিরপাড়া, শিমুলতাইড়, তেলিগাড়ী, কাকালীহাতা, হরিরামপুর, ভাংগরগাছা, ধারাবরির্ষা, বিরামের পাঁচগাছি, হাটবাড়ী, দলিকা, মানিকদাইড়, কর্ণিবাড়ী, শনপচা, মুলবাড়ী, নান্দিনাচর, ডাকাতমারা, তালতলা, মিলনপুর, শালুখা, চর বাটিয়া, গজারিয়া, দারুনা, হাটশেরপুর, ধনারপাড়া, শিমুলবাড়ী, চকরতিনাথ, করমজাপাড়া, নয়াপাড়া, কর্ণিবাড়ী, ধরবন্ধ, দিঘাপাড়া ও ক্ষেপির পাড়াসহ ১১২টি চরের নিম্নাঞ্চল।

চরের বিস্তীর্ণ এলাকায় পশুচারণভূমি পানিতে ডুবে যাওয়ায়  ঘাসের অভাবে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়াসহ সব ধরণেরর গৃহপালিত পশুর খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছেন কৃষক।বন্যার আশঙ্কায় আগাম কাটা পাটের জাগ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে,  উপজেলার ৫০০ হেক্টর পাট, ১৫০ হেক্টর আমন ধান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ধৈঞ্চা, কাউন, তিলসহ অন্যান্য ফসল বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। আগাম বন্যার কারণে চাষীরা অপরিপক্ব পাট কাটছে। এতে ফলন  ৭৫ ভাগ কম হবে। আবাদি পাটের চার ভাগের একভাগ  পানিতে তলিয়ে গেছে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, বিভিন্ন এলাকা হতে পাট এবং ধইঞ্চাসহ কয়েকটি ফসল নিমজ্জিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। খবর পাওয়ার পর ওই সব এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করা হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, প্লাবিত ২৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে  ছাত্র-ছাত্রীদের অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। চারদিকে পানি ওঠায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে ছাত্র-ছাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, আগামী আরো ২/৩ দিন ২০-২৫ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়তে পারে। আগামী ৭ দিন পর্যন্ত নদীর পানি বিপৎসীমার উপরেই থাকবে। এবার নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পানি বাড়লেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙনের কোনো আশঙ্কা নেই।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর