চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়েছে। গত অর্থবছরের শেষ দিন ৩০ জুন (বৃহস্পতিবার) পাস হওয়া এ বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। চলিত অর্থবছর শুরুর দিন ১ জুলাই (শুক্রবার) থেকেই কার্যকর হবে এ বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেটে রাখা প্রস্তাবনাগুলো পাসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বড় কোনও সংশোধনী হয়নি। এ বাজেট প্রস্তাবনায় রয়েছে বিশ্বময় করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে বৈশ্বিক অর্থনীতি মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নবিভোর পরিকল্পনা, বৈশ্বিক সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের অর্থনীতির মহাপরিকল্পনা আর নানাবিধ কারণে কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার পরিকল্পনা। বাড়ানো হয়েছে কৃষি খাতের ভর্তুকি আর সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে খাদ্য নিরাপত্তার। এ বাজেটকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নবিভোর পরিকল্পনা উল্লেখ করেছেন খোদ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ‘কোভিডের আঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শীর্ষক এ বাজেট উপস্থাপন করতে গিয়ে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পাসের জন্য গত ৯ জুন উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। পরে এ বাজেটের খুঁটিনাটি আলোচনা-সমালোচনা করে বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্যরা। বাজেট পাসের আগের দিনে বুধবার (২৯ জুন) অর্থবিল পাস হয় সংসদে। অর্থবিলে পাচারের অর্থ নির্ধোরিত কর দিয়ে দেশে ফেরত আনাসহ বেশ কিছু সুযোগ রাখা হয়েছে। অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
জানা গেছে, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের এবারের বাজেট মোট জিডিপির প্রায় ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ। বাজেটে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, কর্মসংস্থান বাড়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্য সুরক্ষা, বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছে সরকার। এ জন্য রয়েছে যথাযথ দিকনির্দেশনাও। অর্থমন্ত্রীর কথায়, এবারের বাজেট সাধারণ মানুষের জন্য, বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য।
নতুন বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা,এটা জিডিপির ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা, এটা জিডিপির ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। এনবিআর-বহির্ভূত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার কোটি টাকা আর কর-বহির্ভূত রাজস্ব (এনটিআর) আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, এটা জিডিপির ৫ দশমিক ৬ শতাংশের সমান। এনবিআরবহির্ভূত কর থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা, আর কর ছাড়া ৪৫ হাজার কোটি টাকা প্রাপ্তি ধরা হয়েছে। ঘাটতির মধ্যে অনুদানসহ বৈদেশিক উৎস থেকে ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা আসার কথা বলা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
এমকে