উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা

১০ জুলাই ২০২২

সারা দেশে ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রোববার (১০ জুলাই) ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন মুসলাম সম্প্রদায়ে মানুষ। সকালে জামাতে ঈদের নামাজ আদায় শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কোরবানি করবেন মুসল্লীরা। নামাজ আর কোরবানি এ ঈদের প্রধান ইবাদত।

করোনার কারণে দুই বছর ঈদুল ফিতর ও আজহা স্বস্তিতে উদ্‌যাপন করতে পারেনি মুসলমানরা। এবারও ঈদের আজহার প্রাক্কালে দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের আহবান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয় ৮ দফার নির্দেশনা দিয়েছেন।

এদিকে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপ্রতি মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জীবনে সুখ ও আনন্দের বার্তা বয়ে আনবে বলে প্রত্যাশা করেছেন তারা।

ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী জিলহজ মাসের ১০ তারিখ পালিত হয় ঈদুল আজহা। গত ৩০ জুন দেশের আকাশে জিলহজ চাঁদ দেখা যাওয়ায় এবার ১০ জুলাই ঈদুল আজহা উদযাপনের দিন নির্ধারিত হয়। এরই মধ্যে পশু কিনে কোরবানির প্রস্তুতি নিয়েছেন মুসল্লিরা।

নবী ইবরাহীম (আ.), তার স্ত্রী হাজেরা ও ছেলে ইসমাঈলের ত্যাগের স্মৃতি এ ঈদ।  কোরআনে আল্লাহ ত্যাগের নির্দেশ দিয়ে বলছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের উপার্জিত হালাল মালের কিছু অংশ এবং আমি যা তোমাদের জন্য জমিন হতে বের করেছি, তার অংশ ব্যয় করো,’ (বাক্বারাহ ২৬৭)। ঈদুল আজহা মানুষের পশুত্ব, ক্ষুদ্রতা, স্বার্থপরতা, হীনতা, অহংকার কোরবানি করার শিক্ষা দেয়।

এবার পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে শহরে কর্মরতরা ইতোমধ্যেই পথের দুর্ভোগ মাড়িয়ে বাড়ি পৌছেছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উচ্চমূল্যের চাপের সঙ্গে লোডশেডিংয়ের আক্ষেপও থাকছে সাধারণ মানুষের ঈদ আনন্দে। সেই সঙ্গে দেশের একটি অংশের বন্যা কবলিত বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মাঝেও নিরানন্দে কাটছে ঈদের দিন।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঈদ উদযাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের আলোকসজ্জা করা যাবে না। ঈদের নামাজ আদায়ে প্রত্যেককে নিজের বাসা থেকে ওজু করে ঈদগাহে ও মসজিদে আসতে হবে। অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। মসজিদ অথবা ঈদগাহে থাকা জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না। কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে। এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে। করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে খতিব ও ইমামদেরকে দোয়া করতে হবে। করোনার সংক্রমণ রোধে মসজিদ ও ঈদগাহের ওজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। পশু কোরবানির ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

এবার হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাত হবে সকাল ৮টায়। জাতীয় ঈদগাহে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি জাতীয় ঈদগাহে এবারও নামাজ আদায় করবেন না করোনার কারণে, তিনি নামাজ আদায় করবেন তার সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে। চিফ হুইপ, হুইপ, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা, সংসদ-সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মচারীরা ঈদের নামাজ পড়বেন জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এক জামাতে, সকাল ৮টায় এ জামাতে সবার জন্য উন্মুক্ত। বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ৫টি ধাপে জামাত হবে। শুরু হবে সকাল ৭টায়, পরবর্তী জামাত হবে এক ঘণ্টা অন্তর অন্তর। তাছাড়া সারা দেশে সুবিধা মতো সময়ে স্থানীয় ঈদগাহে ও মসজিদে হবে ঈদের জামাত।

ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারও বেসরকারি সব গণমাধ্যম যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার ও সংবাদপত্র বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করছে। দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোও যথাযথভাবে ঈদ উদযাপন করবে। সারাদেশে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রক্ষার্থে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এমকে

 

 


মন্তব্য
জেলার খবর