টি-টোয়েন্টিতে চরম ব্যর্থ হলেও ওয়ানডেতে ক্যারিবিয়দের যেন পাত্তাই দিচ্ছে না টাইগাররা। বুধবার ২য় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০৮ রানে বেধে ফেলে টাইগার বোলাররা। ২০.৪ ওভারেই ক্যারিবিয়দের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে লাল-সবুজের দল। ফলে ৯ উইকেটের জয় পায় তামিমরা। এ জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করেছে তারা।
বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্যটা ছিল খুবই ছোট। দরকার ছিল মাত্র ১০৯ রান। সে রান তুলতে ধীরে-সুস্থে-সাবধানে ব্যাট চালাতে থাকেন তামিম-শান্ত। শান্ত ফেরেন ২০ রানে। ২ চারের মারে ৩৬ বলে এ রান করেন তিনি। শান্ত ফিরলেও ক্রিজে থিতু হয়েছিলেন অধিনায়ক। জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তিনি। তার আগে অপরাজিত ৫০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তামিম। এ নিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৩তম ফিফটি নিজের ঝুলিতে ভরেছেন এ ব্যাটার। ৬২ বলে ৭ চারের মারে সাজোনো ছিল তামিমের ইনিংসটি।
শান্তর বিদায়ের পর তামিমকে সঙ্গ দেন লিটন দাস। মাঠে নেমেই ক্যারিবিয় বোলারদের ওপর চড়াও হন তিনি। ৬ চারের মারে ৩২ রান করে তিনিও অপরাজিত ছিলেন। এ রান করতে ২৭টি বল ব্যয় করেন এ ব্যাটার।
বুধবার গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হয়। যেখানে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
আগের ম্যাচে ওয়ানডে অভিষেক ঘটে নাসুম আহমেদের। অভিষেকে উইকেট না পাওয়ার আক্ষেপ আজ গুছিয়েছেন এ স্পিনার। উইকেটের খাতাটা যখন খুললেন নাসুম, তখন রীতিমতো অপ্রতিরোধ্যই হয়ে উঠেন। তিন ওভারের ব্যবধানে নেন তিন উইকেট, শেষ দুটো আবার একই ওভারে। তাতেই দারুণ বিপদে উইন্ডিজ।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে নাসুম আহমেদ প্রথম ওয়ানডে উইকেটটা পেয়েই গিয়েছিলেন। হোপের বিপক্ষে একটা কট বিহাইন্ডের আবেদন তুলেছিলেন, তাতে আম্পায়ার সাড়াও দিয়েছিলেন। তবে বিপত্তি বাধায় রিভিউ। তৃতীয় আম্পায়ারের রিভিউতে দেখা যায়, বলটা হোপের ব্যাটেই লাগেনি, শব্দ যা শোনা গিয়েছিল, আর স্নিকোমিটারের স্পাইক যা দেখাচ্ছিল, সেটা ব্যাট মাটিতে লাগার শব্দ। তাতে রিভিউতে সফলতা পায় উইন্ডিজ, হতাশায় পড়ে টাইগাররা। আগের ম্যাচে দারুণ কিপটে বোলিংই করছিলেন, ৮ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ১৬ রান। উইকেটের সুযোগও তৈরি করছিলেন, দুবার পেয়েও গিয়েছিলেন, সেই দুই বারও নাসুমের পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল উইন্ডিজের রিভিউ।
তবে আজ আর পারল না। ইনিংসের ১৪তম ওভারে দারুণ এক আর্মারে বিভ্রান্ত করে বোল্ড করেন শামার ব্রুকসকে। উইকেটের পর ইশারায় রিভিউ দেখাচ্ছিলেন নাসুম, তাতে বোঝাই যাচ্ছিল, প্রতিপক্ষের রিভিউ কতটা হতাশায় রেখেছিল তাকে। এরপর দ্বিতীয় আর তৃতীয় উইকেটের দেখা পেলেন দ্রুতই। এক ওভার বাদে তিনি ফেরান বিপদজনক হয়ে উঠতে থাকা শেই হোপকে। তার লেন্থ বলকে স্লগ সুইপ করে সীমানাছাড়া করার চেষ্টা করেন হোপ, তবে সফলতা মেলেনি। শর্ট মিড উইকেটে মোসাদ্দেকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
এর এক বল পরই আবারও নাসুমের আঘাত। এবার তাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বিভ্রান্ত হন নিকলাস পুরান। তাতে ৪৫ রানে চার উইকেট খুইয়ে বসে উইন্ডিজ, যাতে নাসুমের একারই শিকার ৩ উইকেট। নাসুম আহমেদ ১০ ওভার বল করে ৪টি মেডেনসহ ১৯ রানে ৩ উইকেট লাভ করেন।
স্কোর: বাংলাদেশ ১১২/১ (২০.৪ ওভার), ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৮/১০ (৩৫ ওভার)