টানা চার সপ্তাহের পতন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের শেয়ার বাজার। গত সপ্তাহে চার দিন লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিন দিনই সূচকের উত্থান হয়েছে, বাকি একদিন পতন হয়েছে। বিদায়ী সপ্তাহে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)’র বাজার মূলধন বেড়েছে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণের ফলে ঘুরে দাঁড়ানো শক্তি পেয়েছে শেয়ারবাজার, ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) গৃহীত উদ্যোগ- পতন ঠেকাতে বিএসইসি বেঁধে দিয়েছে সার্কিট ব্রেকার। এর আগে টানা চার সপ্তাহের পতনে ৩১ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকার বেশি বাজার মূলধন হারায় ডিএসই।
প্রাপ্ত তথ্যের হিসাবে, বেশ কয়েকটি ব্যাংক শেয়ারবাজারের দিকে পূনরায় ঝুঁকতে শুরু করেছে। এ বাজারে বিনিয়োগের জন্য দুই বছর আগে গঠিত ব্যাংকগুলোর বিশেষ তহবিলের পরিমাণও ধীরে ধীরে বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত এ তহবিলের পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকায়। এর মধ্যে বিনিয়োগ হয়েছে তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
টানা চার সপ্তাহের পতনে যখন বাজার মূলধন হারাতে থাকে শেয়ারবাজার, তখন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য করণীয় নির্ধারণে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকের প্রধান হিসাব কর্মকর্তাদের (সিএফও) সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বৈঠকের পর থেকেই ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করে শেয়ারবাজার। ওদিকে শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা (সার্কিট ব্রেকার) ২ শতাংশ বেঁধে দেয় বিএসইসি। এতে বাজারের তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম এক দিনে ২ শতাংশের বেশি আর কমতে পারছে না।
গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩৯১টি কোম্পানি শেয়ার লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৯টির, কমেছে ১০৩টির, আর অপরিবর্তিত থাকে বাকি ২৪টির। এর আগের সপ্তাহে ৩৯১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছিল ২০৭টির, কমেছিল ১৫৬টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ২৩টির। গত সপ্তাহে সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএক্স ৯৭ দশমিক ৪৪, শরিয়াহ ১৮ দশমিক ৯১ ও ডিএসই-৩০ সূচক ৩৩ পয়েন্ট বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৭৬৫, শরিয়াহ ১ হাজার ৪৫৪ দশমিক ৩১ ও ডিএসই-৩০ সূচক ২ হাজার ৪৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। সূচক বাড়ায় ৫ হাজার ৬৮৬ কোটি ৫৬ লাখ ৭৬ হাজার ২৩৯ টাকা বেড়েছে বাজার মূলধন। সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪০ হাজার ৭৯২ কোটি ৬২ লাখ ৮২ হাজার ৯৭০ টাকায়। অন্যদিকে আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) শেয়ার লেনদেন হওয়া ৩৪০টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩৪টির, কমেছে ৮৯টির, আর বাকি ১৭টির আর অপরিবর্তিত থাকে।
এমকে