চাঁদাবাজির নতুন কৌশল, সিআইডির হাতে গ্রেফতার চার

১৭ জুলাই ২০২২

বাসের চুরি যাওয়া জরুরি কাগজপত্র ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বাস মালিকদের কাছ থেকে মোটা টাকা আদায় করতো তারা। আর সেই কাগজপত্র চুরিও করতো তারা নিজেরাই। ট্রাফিক পুলিশের কারণে জরুরি কাগজ ছাড়া রাস্তায় গাড়ি চালানো যায় না। তাই তারা যে পরিমাণ টাকা দাবি করতো, সেই পরিমাণ টাকা বাধ্য হয়েই তাদের দিয়ে নিজেদের কাগজপত্র ফিরিয়ে নিতেন মালিকরা। একদম নতুন কৌশলে এভাবেই রাজধানী ঢাকায় চাঁদাবাজি করতো তারা। ভুক্তভোগীদের কাছে থেকে অভিযোগ পেয়ে এভাবে চাঁদাবাজিতে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শনিবার গ্রেফতারের পর রোববার মালিবাগে সিআইডির সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মো. ইমাম হোসেন।

গ্রেফতার চারজন হচ্ছে- রাকিব মিয়া ওরফে তুফান (২৭) ও তার তিন সহযোগী-শুকুর আলী (২৮), হৃদয় হোসেন (২১) ও মো. শামিম (২৫)। এর মধ্যে তুফান হচ্ছে পালের গোদা। সে বাসের শ্রমিক ছিল একসময়। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি কাজে ব্যবহৃত সিমসহ দুটি মোবাইল সেট, বিভিন্ন বাসের চোরাই কাগজপত্র জব্দ করা হয়। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই মোহাম্মদপুর বসিলার উত্তর পাড়ার বাসিন্দা।

চৌকস গোয়েন্দা মি. হোসেন বলছেন, এরা যাত্রীবেশে বাসে উঠতেন। বসতেন চালকের পাশে থাকা ইঞ্জিনকভারের উপর। এরপর সময় ও সুযোগ বুঝে চালকের পাশে থাকা বাসের ব্লু-বুক, রেজিস্ট্রশন সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চুরি করতো। চুরি করার পরপরই ভাড়া মিটিয়ে বাস থেকে নেমে যেতো। এরপর মালিক ও চালকের ফোন নম্বর সংগ্রহ করতো।

পুলিশের দক্ষ কর্মকর্তা ইমাম হোসেন আরো বলছেন, এরপর তারা বাসের চালক, মালিককে ফোন দিয়ে কাগজপত্রের বিষয়টি জানাতো। মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে টাকা পাওয়ার পর কাগজপত্র পাঠিয়ে দিতো।

এডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, প্রায় এক হাজার গাড়ির কাগজপত্র চুরি করছিল তারা। এসব গাড়ির মালিকের কাছ থেকে চাঁদাও আদায় করা হয়েছে। প্রত্যেক গাড়ির কাগজপত্রের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হতো। মিরপুর লিংক, শিকড় পরিবহন, খাজাবাবা, প্রজাপতি ও রবরব পরিবহনের কাগজপত্র চুরি করেছিল তারা। চাঁদা না দিলে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এমনকি চালককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হতো। তবে চাঁদা পেয়েও কিছু কাগজ ফেরত না দিয়ে আটকে রেখে মাসোয়ারা আদায় করতো গাড়ির মালিকদের কাছে থেকে। এদিকে তাদের গ্রেফতারে স্বস্তি ফিরেছে বাস মালিকদের মাঝে।

এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর