মানুষের মাথা পুড়িয়ে খায় যে উপজাতি

১৯ জুলাই ২০২২

মানুষ মানুষের মাংস খায় এমনটা কেবল সিনেমায়ই দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবে তা একেবারেই অবিশ্বাস্য। তবে বিশ্বাসযোগ্য না হলেও এমন এক উপজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। নিউ গিনির ঘন জঙ্গলের মধ্যে তাদের বাস। এ উপজাতির নাম আসমত।

এ জাতির লোকেরা মানুষের মাংস খাওয়ার জন্য কুখ্যাত। তারা নৃশংসভাবে হামলা চালান শত্রুপক্ষের উপর। শত্রুকে খুন করার পর তাদের মাথা কেটে তা দিয়ে উদরপূর্তি করেন এ উপজাতির মানুষেরা।

শত্রুপক্ষের মাথা কেটে খাওয়াকে বীরত্ব এবং উপজাতীয় আনুগত্যের প্রতীক বলেই মনে করেন আসমত উপজাতির মানুষ। আসমতিরা প্রথমে কাটা মাথার বাইরের অংশের চামড়া কেটে বাদ দিয়ে দেন। এর পর চুলায় রেখে ভাজা হয় মাংসযুক্ত ওই খুলি। মানুষের মাথাকে তারা পবিত্র খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করে। গাছের সাথেও তুলনা করে।

মাথা কাটার পর বাকি দেহ নিয়েও কারসাজি করতে ছাড়েন না এই উপজাতির মানুষেরা। কাটা দেহ নিজেদের উরুর উপর রেখে প্রার্থনা করেন তারা। মনে করেন, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত ব্যক্তির দৈহিক ক্ষমতা তাদের কাছে চলে আসবে।

খুলিগুলি অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহার করার পাশাপাশি বাড়ির সাজসজ্জাতেও কাজে লাগান আসমত উপজাতির সদস্যেরা। মাথার খুলিগুলিকে বালিশ হিসেবেও ব্যবহার করেন তারা। পাশাপাশি এ খুলিগুলিকে অর্ধেক করে তা খাবার খাওয়ার পাত্র হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

মৃতদেহের মেরুদণ্ডের বিভিন্ন অংশ ও চোয়াল দিয়ে কানের দুলও বানান আসমাত উপজাতির সদস্যেরা। আসমত উপজাতির কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে তারা সেই সদস্যেরও মাথা কেটে নেন। কাটা মুণ্ডু থেকে চোখ এবং ঘিলু বের করে নেওয়া হয়।

আমেরিকার প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট নেলসন রকফেলারের পঞ্চম সন্তান মাইকেল রকফেলার ১৯৬১ সালের নভেম্বর মাসে এমন একটি এলাকা থেকে নিখোঁজ হন, যেখানে অসমত জনজাতির বসবাস।

পরে তার পরিবারের তরফে একজন গোয়েন্দাকে সেই এলাকায় তদন্তের জন্য পাঠানো হলে এই উপজাতির কিছু মানুষ তাকে জানান, তারা সম্প্রতি একজন শ্বেতাঙ্গকে মেরেছেন। এরপর ওই গোয়েন্দা তিনটি খুলি নিয়ে সেই জায়গা থেকে আমেরিকা ফিরে আসেন। এ খুলির মধ্যে একটি খুলি আসমত উপজাতির সদস্যদের দ্বারা হত্যা করা ওই শ্বেতাঙ্গের ছিল।

সৌভাগ্যক্রমে বর্তমানে আসমাতিরা আর শত্রুপক্ষের মাথা কেটে খাওয়ার এবং খুলি বের করার অনুশীলন মেনে চলেন না। ১৯৮০ সালে এ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।


মন্তব্য
জেলার খবর