পা দিয়ে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেন তামান্না

০৬ অগাস্ট ২০২২

জন্ম থেকে দুটি হাতের একটিও নেই। কেবল আছে বাঁ পাটি। এক পায়ে ঠিকমতো হাঁটতেও পারেন না। খাওয়া দাওয়া সবকিছু ওই এক পা-ই ভরসা। ওই এক পা দিয়ে লিখে এবার ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের অনুষ্ঠিত গুচ্ছভুক্ত ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তামান্না আক্তার। বৃহস্পতিবার বিকালে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৮ দশমিক ২৫। পিইসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইসএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন তামান্না।

 

তামান্না আক্তার বলেন, ‘আমি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিষয়ে পড়তে চাই। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা শেষ করে বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই।’

 

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া আলীপুর গ্রামে জন্ম তামান্নার। তার বাবার নাম রওশন আলী। ঝিকরগাছা উপজেলার ছোট পৌদাউলিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার (নন–এমপিও) শিক্ষক তিনি। মা খাদিজা পারভীন গৃহিণী। তামান্নারা তিন ভাইবোন। তামান্না সবার বড়। ছোট বোন মুমতাহিনা রশ্মি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ভাই মুহিবুল্লা তাজ প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

 

বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সামছুর রহমান বলেন, ‘তামান্না আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী। তার মেধার প্রশংসা আমাদের কলেজ শিক্ষকরা প্রায়ই করেন। তামান্না জন্মপ্রতিবন্ধী হয়েও নানান প্রতিবন্ধকতা জয় করেছে। দেখিয়ে দিয়েছে সমাজকে। শুধু পড়াশোনা না, তামান্না ভালো ছবিও আঁকে। এমনকি কম্পিউটার চালানোয়ও সে বেশ দক্ষ। জন্ম থেকেই তার দুটি হাত ও একটা পা নেই। অথচ একটা পা দিয়েই তামান্নার যুদ্ধ চলছে। আমি আশা রাখি সে ভবিষ্যতে অনেক ভালো কিছু করবে। তবে এখন সবচেয়ে বেশি দরকার সরকারের সহযোগিতা।’


মন্তব্য
জেলার খবর