ভারতীয় বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ-মার্কিন নাগরিক ও ইসলামবিদ্বেষী লেখক সালমান রুশদির ওপর নিউ ইয়র্কে হামলা হয়েছে। আমেরিকার নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তার ওপর এ হামলা হয়।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার শাটাকোয়া ইনস্টিটিউটে বক্তৃতা করতে গিয়েছিলেন বুকারজয়ী এ লেখক। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক যখন ৭৫ বছর বয়সী সালমান রুশদিকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন, তখনই এক লোক দর্শক সারির বাঁ দিক থেকে মঞ্চে গিয়ে তাকে একের পর এক ছুরিকাঘাত করতে থাকেন। এসময় দর্শকেরা মঞ্চে ছুটে আসেন এবং হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। রুশদি পাঁচ মিনিট বা তারও বেশি সময় মেঝেতে পড়ে ছিলেন। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ছুরিকাঘাতের ফলে রুশদির ঘাড়ে ক্ষত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হেলিকপ্টারে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে সলমন রুশদিকে। তার উপর হওয়া হামলার আঘাতের কারণে একটি চোখ হারাতে পারেন বলেও তার এজেন্ট (রুশদির হয়ে যিনি বিভিন্ন সংস্থা বা মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন) সূত্রে জানা গেছে। তার এজেন্ট আরও জানিয়েছেন, রুশদির হাতের স্নায়ু ছিঁড়ে গেছে এবং যকৃৎ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। রুশদির এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলিকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ‘‘রুশদির অবস্থা গুরুতর। তিনি সম্ভবত একটি চোখ হারাতে চলেছেন।’’
১৯৮৮ সালে রুশদি মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.), হযরত ইব্রাহিম (আ.) ও পবিত্র কুরআনের অবমাননার উপন্যাস ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ (শয়তানের পদাবলী) লেখেন। ইহুদিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলোর আর্থিক সহায়তাপুষ্ট বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর পরই ভারত ও পাকিস্তানের মুসলমানরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদীদের ওপর পুলিশি হামলায় কয়েকজন মুসলমান শাহাদত বরণ করেন। পরে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে নিন্দা ও বিক্ষোভ। আমেরিকা ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশ এবং শহরের মুসলমানরা ইসলাম অবমাননার বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। কিন্তু বাক-স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে পাশ্চাত্য রুশদির প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখে।