সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের দিল্লিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এটাই তার শেষ রাষ্ট্রীয় সফর। তাই এ সফর নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে দু’দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। এ সফরের প্রভাব নির্বাচনে পড়তে পারে কি-না তা নিয়েও ভাবছেন রাজনৈতিক বোদ্ধাদের অনেকে। এদিকে সফরকে ফলপ্রসূ করে তুলতে দু’দেশের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে দিল্লি পৌঁছেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি দল। সফরের নানা লজিস্টিক্যাল খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করছেন তারা।
এ সফরেও বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি দিনের আলো দেখার সম্ভাবনা নেই। কারণ দুই পক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ সফরে তিস্তা চুক্তির জট খুলে যাবে এতটা আশা করা ঠিক না। তাই বলে সফরের অর্জন কম হবে, এটা ভাবারও কোনও কারণ নেই। দিল্লির সরকারি সংশ্লিষ্ট এক শীর্ষ কর্মকর্তা মনে করছেন, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এটাই শেখ হাসিনার শেষ সফর হওয়ায় ভারত তাকে কিছুতেই খালি হাতে ফেরাতে পারবে না। তার যুক্তি, পরিস্থিতি সেরকম হলে এ সফরটাই হতো না।
এদিকে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এ সফরে সেপা (কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট) নামক বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ চুক্তির খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছেন। ভারত এ চুক্তিতে রাজি হলে দু’দেশের মধ্যে শত শত পণ্যের অবাধ ও শুল্কমুক্ত বাণিজ্যর জন্য এ সমঝোতা যুগান্তকারী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনার সফরসূচি: সফরের প্রথম দিনে (৫ সেপ্টেম্বর) কোনও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক থাকছে না। তবে এদিনে চাণক্যপুরীর বাংলাদেশ দূতাবাসে ভারতীয় অতিথিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তার। ৬ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা রাজঘাটে গান্ধী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা অর্পণ করবেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনারের মধ্যে দিয়ে তার আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনার শেষে শুরু হবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলো। প্রতিনিধিদল পর্যায়ের বৈঠকের পাশাপাশি দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত বৈঠকও হবে এদিনে। দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে দিনভর বৈঠক শেষে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে একটি যৌথ ঘোষণাপত্র জারি করার কথা রয়েছে। ৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধান বণিকসভাগুলোর প্ল্যাটফর্মে শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন। ভারতের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কীভাবে উভয়পক্ষই উপকৃত হবে, সেই চিত্র তুলে ধরবেন তিনি। সেখান থেকে রাজস্থানের পবিত্র আজমির শরিফ দরগায় মাজার জিয়ারত শেষে রাজস্থানের রাজধানী জয়পুরের বিমানবন্দর থেকেই ৮ সেপ্টেম্বর সোজা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সফরকালে দিল্লির সর্দার প্যাটেল রোডের অভিজাত হোটেল তাজ প্যালেসে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী।
এমকে