মঙ্গলবার দেশের ৩৯ নাগরিক যৌথভাবে এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়াই নির্বাচন কমিশন (ইসি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটা অযৌক্তিক। এটা রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও উসকে দেবে, কমিশনের বর্তমান আস্থার সংকটকে আরও প্রকট করে তুলবে। এর পরের দিনই (বুধবার) প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে শতভাগ সমঝোতা হলে সব ভোট ব্যালটে হবে। সব দল নির্বাচনে আসলে সেটা ভালো উদ্যোগ। রাজনৈতিক সংকট হতে পারে- এটা জানা নেই। ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক সংকট হলে, সেটা মোকাবিলার ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে ইভিএম নিয়ে কোনও সংকট দেখছে না ইসি, ইভিএম নিয়ে রাজনৈতিক সংকট প্রকট হবে না বলেও মনে করছে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠান।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন সিইসি। এর আগে ইসি জানায়, ইভিএম পাওয়া সাপেক্ষ সর্বোচ্চ ১৫০ আসনে এ মেশিনে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এ সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিয়েছে তারা, কোনো রাজনৈতিক দলের মতামতে ভিত্তিতে নয়।
বুধবার সিইসি বলেন, রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে যে সংকটগুলো দেখা যাচ্ছে- সেটা ইভিএম নিয়ে নয়। আরও মোটা দাগের সংকট। এ সংকটগুলো কেটে যাওয়ার আশাও প্রকাশ করেন কাজী আউয়াল। বলেন, ইভিএমে ভোট করলাম কি করলাম না সেটা নয়, নির্বাচনটা সঠিক, অবাধ, নির্বিঘ্ন হলো কিনা- সেটা ইভিএমে হোক ব্যালটে হোক, সেটাই বড় কথা। বাজারে যে কথা চালু রয়েছে, ইভিএমকে ডিজিটাল জালিয়াতি- এর সপক্ষে কোনও প্রমাণ পায়নি ইসি। তাই দৃঢ়ভাবে বলতে চাচ্ছি- ডিজিটাল জালিয়াতি সম্ভব নয়। আমাদেরই প্রমাণ করতে হবে ডিজিটাল জালিয়াতি সম্ভব নয়—এটা কিন্তু আইনগত ভাষা নয় –যোগ করেন কাজী আউয়াল।
ইভিএম প্রসঙ্গে সিইসি আরও বলেন, কারচুপি ও সহিংসতা নিঃসন্দেহে কমে যাবে। আমরা স্টাডি করেছি, ইভিএমে আমার ভোট আপনি, আপনার ভোট আমি দিতে পারবো না। জোরাজুরি, সহিংসতা অনেকখানি কমে যাবে। সিইসি জানান, যদি ইভিএম তুলে দেওয়া হয়; যদি কারচুপি হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় কেউ পরাজিত হয়ে মামলা করে পুনর্গণনার মাধ্যমে জয়ী হয়ে সংসদে আসতে পারবেন না। এটা গ্রাউন্ড রিয়েলিটি। এটাকে আমলে নিয়েছে ইসি। সিইসি জানান, ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৫০টি আসনে ইভিএমে আর বাকি ১৫০টিতে ব্যালটে ভোট করার। কোনও পরিবর্তন করতে হলে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করতে হবে আমাদের।
এমকে