হিজাব না পরার থানায় তলবের পর তরুণীর মৃত্যু

১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

রাস্তায় বেরিয়ে হিজাব পরেননি। তাই ‘শিক্ষা দেওয়ার’ জন্য পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পরই রহস্যজনকভাবে মারা গেলেন ২২ বছরের তরুণী। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার, ইরানের রাজধানী তেহরানে। তরুণীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি।

 

বৃহস্পতিবার পরিবারের সকলের সাথে গাড়িতে ইরানের কুর্দিস্তান থেকে রাজধানী তেহরানে এক আত্মীয়ের বাড়ি আসছিলেন ওই তরুণী মাহশা আমিনি। সেই সময় তাদের গাড়ি আটকায় ইরানের পুলিশ। ইসলামিক রীতি মেনে মহিলারা পোশাক পরছেন কি না, হিজাব পরছেন কি না, তা দেখাই এই পুলিশদের কাজ। সে দিন গাড়িতে আমিনির হিজাব পরেননি বলে তাদের অভিযোগ। আমিনির পরিবারের অভিযোগ, তাদের সামনেই আমিনিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিজেদের গাড়িতে তোলে পুলিশ।

 

আমিনির ভাই কিয়ারাশ জানান, তার বোন আমিনিকে এক ঘণ্টার জন্য স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয়। পুলিশের তরফে জানানো হয়, আমিনিকে ইসলামিক রীতি-আচার শেখানো প্রয়োজন। কিন্তু এক ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর কিয়ারাশ দেখেন থানার সামনে একটি অ্যাম্বুলেন্স এসে দাঁড়াচ্ছে। তারপরই তাদের খবর দেওয়া হয় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আমিনিকে। কিছু সময় পরে আমিনির মৃত্যুসংবাদ জানানো হয় পরিবারকে।

 

ইরানের আধা সরকারি সংবাদসংস্থা আইএসএনএ-র তরফে এ খবরটি প্রথম প্রকাশ্যে আনা হয়। খবরটি প্রকাশ্যে আসার পরই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেন সে দেশের মানবাধিকার রক্ষার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। সমালোচনার মুখে পুলিশের তরফে একটি সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়, যে ফুটেজে পুলিশের সঙ্গে আমিনির কথোপকথন চলার সময়ে মাঝের প্রায় ১৯ সেকেন্ড নেই। ১৯ সেকেন্ড আগের অংশে একটি আলোকোজ্জ্বল ঘরে আমিনিকে বসে থাকতে দেখা গেলেও পরের অংশে আধো অন্ধকার জায়গায় এক অফিসারককে আমিনির সামনে কিছু বলতে দেখা যায়। তারপরই অচৈতন্য হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আমিনি। পুলিশের দাবি, আগে থেকেই হৃদ্‌রোগের সমস্যায় ভুগছিলেন আমিনি। যদিও আমিনির পরিবারের দাবি, কোনো রকম শারীরিক সমস্যা ছিল না তার।


মন্তব্য
জেলার খবর