গত পাঁচ দশকে দেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন অগ্রগতি সাধন করেছে। তবে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতিতে আর্থিক খাতের সংস্কারসহ প্রধানত তিনটি চ্যালেঞ্জ। অন্য দু‘টি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- শক্তিশালী বাণিজ্য প্রতিযোগিতার অভাব এবং অপরিকল্পিত শহরায়ণ। বাংলাদেশ কান্ট্রি ইকোনমিক মেমোরেন্ডাম চেঞ্জিং অব ফেব্রিক শীর্ষক প্রতিবেদনে চ্যালেঞ্জগুলোর কথা উল্লেখ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত পাঁচ দশকের এ প্রবৃদ্ধির গতিপথ ধরে রাখতে এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রবৃদ্ধির হারকে আরও ত্বরান্বিত করতে দরকার একট শক্তিশালী সংস্কার এজেন্ডা। সেইসঙ্গে রফতানির ক্ষেত্রে শুল্ক-অশুল্ক বাধা ও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে হবে। আর তৈরি পোশাক খাতের বাইরে রফতানি পণ্য ও বাজার বহুমুখীকরণ, বেসরকারি ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি, এলডিসি উত্তরণের পরবর্তী টিকে থাকতে বাণিজ্যিক সক্ষমতা বাড়ানোসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে রফতানি অস্থিরতার ঝুঁকি কমাতে প্রবৃদ্ধির নতুন উৎস তৈরির কথা।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তৈরি পোশাকের ওপর অত্যধিক নির্ভরতা এবং দেশীয় শিল্প প্রতিরক্ষামূলক শুল্ক ব্যবস্থা ও বৈচিত্রময়তা না থাকা রফতানি বৃদ্ধিকে বাধা দেয়। কম মজুরির ভিত্তিতে বাণিজ্য প্রতিযোগিতার সঙ্গে রফতানি ঝুড়িকে বৈচিত্রময় করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে পারে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশে গড় শুল্ক তুলনাকারী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। মধ্যবর্তী পণ্যের গড় শুল্ক হার ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ। সামগ্রিক বাণিজ্য ব্যয় এবং অদক্ষ সীমান্ত প্রক্রিয়া বাণিজ্যে প্রধান প্রতিবন্ধকতা। গভীর এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ভারতের সাথে শুল্ক আধুনিকীকরণ, বর্ধিত বাণিজ্য সহজীকরণ, পরিষেবা ও বিনিয়োগ সংস্কারের বাণিজ্য চুক্তি দেশের জিডিপি বৃদ্ধি করতে পারে। তাছাড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বেসরকারি খাতে অর্থায়ন বৃদ্ধি অপরিহার্য। সম্পদের গুণমান উন্নত করা, ব্যাংকের মূলধন বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণ মোকাবেলা আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জরুরি। বেসরকারি ঋণ বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো দরকার দেশে।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন, বর্তমান সিনিয়র ইকোনমিস্ট ড. নোরা ডিহেল, সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান, এসবিকে টেক ভেঞ্চারের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির, বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চ্যান এবং সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয় প্র্যাকটিস ম্যানেজার হুন এস শো উপস্থিত ছিলেন।
এমকে