প্রায় বিশ বছর আগের ঘটনা। মাত্র ৩৮ ইঞ্চি (৩ ফুট ২ ইঞ্চি) উচ্চতার রাজশাহীর বাসিন্দা মাসুরা বেগমের প্রেমে পড়েন গাইবান্ধার মনিরুল ইসলাম। এরপর ২০০৩ সালে এ যুগল বিয়ে করেন। দশ বছর পর ২০১৩ সালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যা প্রসব করেন মাসুরা বেগম। ৩৮ ইঞ্চির মাসুরা প্রেমিকা হিসেবে যতটা না আলোচনায় ছিলেন, তার চেয়ে অনেক অনকগুন বেশি আলোচনার সামনে আসেন মা হওয়ার পরে। গর্ভধারণ থেকে প্রসবকালীন মাসুরার তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসকরা বলেছেন, উচ্চতার দিক দিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় এবং এশিয়ার ‘খাটো’ মা হচ্ছেন এ মাসুরা বেগম।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, উচ্চতার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে ‘খাটো’ মা হচ্ছেন আমেরিকার স্টেসি হেরাল্ড, তার উচ্চতা ২৮ ইঞ্চি। ২০০৬ সালে প্রথম সন্তান জন্ম দেওয়ার পর ২০১৮ সালে মারা যান তিনি। এদিকে ভারতের গণমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘খাটো’ মা হচ্ছেন কামাক্ষি। ভারতীয় এ নারীর উচ্চতা ৪১ ইঞ্চি, ২০১১ সালে বাচ্চা প্রসব করেন তিনি। রাজশাহীর মাসুরা বেগমের উচ্চতা কামাক্ষির চেয়েও তিন ইঞ্চি কম। ।
রাজশাহীর পবা উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় কাজের জন্য আসা মনিরুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয় মাসুরা বেগমের। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গর্ভকালীন শতকষ্টেও মাসুরার পাশে ছিলেন মনিরুল। গর্ভধারণের আট মাস ১০ দিন পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় তার। এখন সেই সন্তান- মরিয়মের বয়স আট বছরের কিছুটা বেশি। মরিয়ম অবশ্য উচ্চতায় ইতোমধ্যেই তার মায়ের উচ্চতাকে টপকে গেছে, ৪১ ইঞ্চি উচ্চতায় পৌঁছেছে। মরিয়ম পড়ছে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনী বিভাগের তৎকালীন প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসিনা আক্তার ও আবাসিক সার্জন নুরে আতিয়া লাভলী গর্ভকালীন মাসুরার চিকিৎসক ছিলেন বলে জানা গেছে। মাসুরা বেগমের স্বামী মনিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শারীরিক যোগ্যতা নয়, ভালবাসা এবং ভাল থাকার জন্য প্রয়োজন সুন্দর মন।
এমকে