আগামী বছর বিশ্বব্যাপী দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে সবাই আতঙ্কিত ও শঙ্কিত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টা বেশি বিবেচনা করা দরকার সবার। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ কারণে আদিযুগে ফিরে যাওয়ার মতো, চেরাগ জ্বালিয়ে চলার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। সে ক্ষেত্রেও সরকারের তরফ থেকে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সবাইকে। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী একটা আশঙ্কা, আগামী বছর একটা মহাসংকটের বছর হবে। সেই জন্য আগ থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টা বেশি বিবেচনা করার দরকার।’
বিদ্যমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন- করোনাভাইরাস, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে তার সরকার। দেশে রিজার্ভ যথেষ্ট আছে। যদি কোনও সংকট আসে, তাহলে পাঁচ মাসের খাদ্য কেনার মতো সক্ষমতা আছে কিনা- সেটা দেখা হয়। বাংলাদেশের সে সক্ষমতা আছে। বাংলাদেশ কখনও ঋণখেলাপি ছিল না। সংকট মোকাবিলায় জনগণকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান শেখ হাসিনা।
দেশের অর্থনীতির জন্য তার সরকারের নেওয়া পরিকল্পনা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন- স্বল্প, মধ্য ও দ্রুত মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। যে কোনও ক্ষেত্রে দেশের ঝুঁকি নেই- এটুকু আমি কথা দিতে পারি।
বিশ্বের জ্বালানি সংকট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে আদিযুগে ফিরতে হবে। ভেন্নার তেল আর রেড়ির তেল দিয়ে কুপিবাতি জ্বালাতে হবে। তিনি জানান, বিশ্বে তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, গ্যাসের অভাব আমাদের যতটুকু আছে তা ব্যবহার করছি। নতুন করে সন্ধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যেটুকু পারি চালাচ্ছি। উন্নত দেশগুলোর মানুষ সব থেকে কষ্ট পাচ্ছে। আমাদের দেশেও সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। এখন থেকে সবাই প্রস্তুত হন চেরাগ জ্বালিয়ে চলতে হবে। হাঁড়িতে কাঠখড়ি পুড়িয়ে রান্না করতে হবে। তবে দেশের মাটি ও মানুষকে নিয়ে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে পারলে কোনও অসুবিধা হবে না বলেও মনে করেন শেখ হাসিনা। বলেন, এতে আমরা খেয়ে-পরে থাকতে পারবো। মানুষকেও খাওয়াতে পারবো। এ আশ্বাস দিতে পারি। তিনি জানান, সরকার খাদ্যের ওপর জোর দিচ্ছে। শুধু খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে আলাদা বাজেটও রাখা হয়েছে। সেই প্রস্তুতি নেওয়া আছে। নিজেদের থাকা জায়গায় চাষাবাদ শুরু করে দেওয়ার আহবান জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, আদিযুগে ফেরত যান। পেট ভরে খেতে পারবেন। শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। আওয়াজ-টাওয়াজ পাবেন না। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশ চলার জন্য যতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন সেটা দিতে পারবো। সেটা পাবেন।
এমকে