ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পুঁজিবাজার

০৮ অক্টোবর ২০২২

গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার দিনের মধ্যে তিন দিন উত্থান হয়েছে, বাকি একদিন  পতন হয়েছে সূচকের। বেড়েছে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটদর। এতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি (বাজার মূলধন) বেড়েছে ১ হাজার ৭৬২ কোটি টাকার বেশি। এভাবেই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পুঁজিবাজার। এর পেছনে রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা পদক্ষেপ।

পুঁজিবাজার যখন আস্থা হারাচ্ছিল, তখন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন পুঁজিবাজারকে। পুঁজিবাজারকে চাঙা করতে দেশবাসীকে সঞ্চয়পত্র না কিনে শেয়ার বাজারে আসার পরামর্শওে দিয়েছেন তিনি। বন্ড বাজারের উন্নয়ন হলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমবে, পুঁজিবাজারেরও উন্নয়ন হবে বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ।

জানা গেছে, পুঁজিবাজারে সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ড লেনদেন চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে গত সপ্তাহে বাজার মূলধন বেড়েছে পৌনে ২ হাজার কোটি টাকা। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের অনেকেই আশা করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা অব্যাহত থাকলে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে এ বাজার।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সরকারি বিল-বন্ডের লেনদেন শুরু হচ্ছে সোমবার (১০ অক্টোবর)। এ লেনদেন চালু করায় সরকারি বিল-বন্ডের বিপরীতে মিলবে সুদ। বিল ও বন্ড কিনলে সুদ দেওয়া হয় মেয়াদপূর্তিতে। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগেও তাই হবে। ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে থাকে সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ।

এখন বিল ও বন্ড বিক্রি করতে চাইলে কেবল সোমবার কেনা যাবে। তবে প্রতি সপ্তাহে নিলাম হয়, এরপর বাজারে বিল ও বন্ড পাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। বর্তমানে বিল-বন্ডে সুদ সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ। সরকারের বিভিন্ন মেয়াদি বন্ড ও বিল রয়েছে, সেখান থেকে টাকা ধার করার সুযোগ আছে। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বর্তমানে এ বন্ড-বিলের লেনদেনে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীর কেনাবেচার সুযোগ আছে।

এদিকে গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া মোট ৩৮৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ১০১টির, বিপরীতে কমেছে ৯৪টির, আর অপরিবর্তিত ছিল বাকি ১৯২টির। সূচকগুলোর মধ্যে প্রধানটি ৫৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৬৯ পয়েন্টে, ডিএসইএস ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৪৩ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক ৩১ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৩৬১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজার মূলধন ১ হাজার ৭৬২ কোটি ৪০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৮৭ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২১ হাজার ৬৭৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬২ হাজার ৬৯২ টাকায়।  লেনদেন হয়েছে মোট ৫ হাজার ২৭৮ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৪৯৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের সপ্তাহের লেনদেন ছিল ৭ হাজার ৩০৬ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৪ টাকা।

অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচক ১৪৩ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৩৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮৯ কোটি ১৯ লাখ ৯১ হাজার ৪২৫ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। লেনদেন হওয়া ৩০৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭টি প্রতিষ্ঠানের, কমেছে ৭৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৪২টির দাম।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর