বগুড়ায় জল তরঙ্গে বিজয় নিশান,নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের

২৯ মার্চ ২০২২

দীপক কুমার সরকার, বগুড়া:

বগুড়ার ধুনট উপজেলা অফিস চত্বরে দীর্ঘদিন ধরেই পরিত্যক্ত ছিল একটি মজা পুকুর। দুর্গন্ধও ছড়াতো পুকুর থাকা ময়লা-আবর্জনা। পুকুরটা অনেকটা সৌন্দর্যহানি করে আসছিল। এমন অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে পুকুরটিকে সংস্কারের মাধ্যমে জনকল্যাণ ও দৃষ্টিনন্দন হিসেবে উপস্থাপন করা যায় কি-না, এ চিন্তা-ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছিল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্তের মাথায়। বিষয়টি শেয়ার করেন ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশাহের সঙ্গেও।

দৃষ্টিনন্দন হিসেবে উপস্থাপনের জন্য শুধু একটা জাতীয় দিবসের অপেক্ষা করছিলেন সঞ্জয় কুমার। নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্বাধীন বাংলার বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরার জন্য ভিন্ন পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পুকুরটি ১৫ দিন ধরে সংস্কার করা হয়। এরপর সেই পুকুরের তলদেশে লাল সবুজ মরিচবাতি লাগানো হয়। মরিচবাতিগুলো এমনভাবে বসানো হয়, যেন সুইচ চাপলে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা চিত্র ফুটে উঠবে। এটার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জলতরঙ্গে বিজয় নিশান’। পুকুরে সামান্য পানির একটু ওপরে সুতার সঙ্গে বাতি বেঁধে আলোকসজ্জার মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পানির তলদেশে ৯২ হাজার ৩৪০টি লাল ও সবুজ রঙের মরিচ বাতি জ্বালিয়ে ব্যতিক্রমীভাবে জাতীয় পতাকা ফুটিয়ে তোলা হয়। ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৯৬ ফুট প্রস্থ এ পুকুরের পানিতে জাতীয় পতাকা ছাড়াও ফুটিয়ে তোলা হয় মেট্টো রেলসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহিত মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে পদ্মাসেতু, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মেট্টোরেল ও ফ্লাইওভারের মতো উন্নয়ন চিত্রগুলো। পুকুরের একপাশে লেখা রয়েছে ‘আই লাভ বঙ্গবন্ধু’। অন্যপাশে ‘দ্য মাদার অব হিউম্যানিটি’। আর একপাশে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে নৌকা। যে নৌকার এক পাশে বঙ্গবন্ধুর ছবি, আরেক পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। এ বিজয় নিশান নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এমন আয়োজন করা হয় বলে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে। এ কাজে সহাযোগিতা করেন মেয়র। ২৬ মার্চ রাতে ধুনট উপজেলা পরিষদের পাশের মুজিব চত্বর এলাকায় করা ‘জলতরঙ্গে বিজয় নিশান’ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।প্রদর্শনীটি আগামী ৩১ মার্চ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত চলবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। এ স্বপ্ন তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু ও তার স্বপ্নের সোনার বাংলা হৃদয়ে ধারণ করতেই এমন আয়োজন করা হয়েছে।

বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, এটি ইনস্টলেশন আর্টের মর্যাদা পেয়েছে। এটি বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করছে। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্তকে ধন্যবাদ জানান এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগের জন্য।

দীপক কুমার সরকার/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর