শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নেই। সবধরনের পুষ্টি উপাদন সঠিক পরিমাণে রয়েছে এতে। সেই মায়ের দুধেই পাওয়া গেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। ফলে নবজাতকের স্বাস্থ্য নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। ইতালিয়ান একটি গবেষক দল ৩৪ জন মায়ের ওপর এ গবেষণা চালান। গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন ওইসব মায়ের চারভাগের তিন ভাগের বুকের দুধেই মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব আছে।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের যথেচ্ছা ব্যবহারকে এর জন্য দায়ী করেছেন গবেষকরা। প্রতিবছর সারাবিশ্বে উৎপাদন হয় কমপক্ষে ৩৪ কোটি ৪০ লাখ টন প্লাস্টিক। এসব প্লাস্টিক যখন ভেঙে ফেলা হয় বা রিসাইকেল করা হয়, তখন বড় ঝুঁকির কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, আমরা যে বাতাসে নিশ্বাস নিই, তাতে এ প্লাস্টিক পার্টিক্যাল বা কণার সন্ধান মিলেছে। সমুদ্রে প্লাস্টিকের সন্ধান মিলেছে। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্লাস্টিকের সন্ধান মিলেছে।
মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় নবজাতকের শরীরে, মানুষের ব্রেনে আর সর্বশেষ মায়েদের বুকের দুধে সন্ধান মিলল এ প্লাস্টিকের। তা সত্ত্বেও এখনও বিজ্ঞানীরা বলছেন, নবজাতকের জন্য সবচেয়ে সেরা খাবার মায়ের বুকের দুধ।
গবেষক দল প্রথমে নবজাতকের প্লাসেন্টায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পান ২০২০ সালে। এ গবেষক দলে আছেন, আনকোনায় অবস্থিত ইউনিভারসিটা পালিটেকনিকা ডেলে মার্চের ড. ভ্যালেন্টিনা নোটারস্টেফানো। তিনি বলেছেন, মায়েদের বুকের দুধে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে আমাদেরকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। এর ফলে নবজাতকরা চরম বিপন্ন অবস্থায় পড়বে। ফলে নারী যখন অন্তঃসত্ত্বা থাকেন এবং শিশুকে বুকের দুধ পান করান তখন তার শরীরে যাতে প্লাস্টিকের উপস্থিতি না থাকে, তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে মায়ের বুকের দুধ শিশুকে পান করানো কমিয়ে দেয়া উচিত হবে না। কিন্তু রাজনীতিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে তারা দূষণ কমিয়ে আনার জন্য আইন করেন।