মারধর বা মাথায় আঘাত নয়, ইরানের ২২ বছরের মাহশা আমিনির মৃত্যু হয়েছে শারীরিক অসুস্থতাতেই। শুক্রবার ইরানের ফরেন্সিক দফতর একটি বিবৃতিতে প্রকাশ করেছে এ তথ্য। পাশাপাশি তুলে ধরেছে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণও। বিশেষজ্ঞদের দাবি, আট বছর বয়সে মস্তিষ্কে একটি টিউমারের জন্য জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছিল মাহশার। সেই অস্ত্রোপচারের ফলে তখন সুস্থ হয়ে উঠলেও পরিণত বয়সে সেই সংক্রান্ত অসুস্থতা ধীরে ধীরে ফিরে আসছিল। ঘটনাচক্রে, যে দিন নীতিপুলিশ হিজাব দিয়ে চুল পুরোপুরি না ঢাকার অপরাধে মাহশাকে গ্রেফতার করেছিল, সে দিনই তার অসুস্থতা গুরুতর হয়ে পড়ে। মৃত্যু হয়েছে তার ফলেই। এর আগেও অবশ্য তেহরানে ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগের ডিরেক্টর জেনারেল মেহদি ফারুজেশ বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘মাহশার মাথায়, মুখে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই।’’
এ দিকে, এ বিষয়টি মানতে নারাজ মাহশার পরিবার। তাদের দাবি, মাথায় ঘাড়ে আঘাতের ফলেই মৃত্যু হয়েছে। নীতিপুলিশ থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে নির্মম অত্যাচার চালায় তার উপর। সেই বিষয়টি ঢাকতেই বার বার অসুস্থতার তত্ত্ব তুলে আনতে চাইছে প্রশাসন। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাহশার বাবা আমজাদ দাবি করেছিলেন, কোনো রকম অসুস্থতা ছিল না তার মেয়ে।
পুলিশ-প্রশাসনের দাবি উড়িয়ে মাহশার বাবা বলেছেন, ‘‘আমার মেয়ের কোনো রকম অসুস্থতা ছিল না। ওকে কখনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়নি। কখনও কোনো অস্ত্রোপচার করা হয়নি ওর। প্রশাসন মিথ্যে কথা বলছে।’’
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশ গ্রেফতার কারে আমিনিকে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে মাহশার মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনার পরই প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন ইরানের মহিলারা। দেশ-বিদেশের হিজাব বিরোধীদের উস্কানিতে আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে। প্রশাসনের কড়া বলপ্রয়োগের ফলেও থামানো যাচ্ছে না বিক্ষোভ। প্রকাশ্য রাস্তায় হিজাব পুড়িয়ে, মাথার চুল কেটে ফেলে ২১ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।