ভোটগ্রহণে অনিয়ম: গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণা

১২ অক্টোবর ২০২২

সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণে অনিয়ম ধরা পড়ায় গাইবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার (১২ অক্টোবর) সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পরে দুপুরে এ ঘোষণা দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সিইসি সাংবাদিকদের বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সকাল ৮টায় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশন ভবনে একটি পর্যবেক্ষণ কক্ষ  করা হয়। সেখান বসে কেন্দ্রে স্থাপন করা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে কেন্দ্রের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রথম থেকে লক্ষ করেছি—ভোটগ্রহণে অনিয়ম হচ্ছে। অনেক কেন্দ্রে গোপন ভোটকক্ষে অবৈধ অনুপ্রবেশ লক্ষ করা গেছে। অবৈধভাবে প্রবেশ করে ভোটারদের ভোট প্রদানে সহায়তা করছে, অথবা বাধ্য করছে। এটা সুস্পষ্টভাবে লক্ষ করা গেছে। অনিয়ম এবং অবৈধ কাজগুলো বেশ মোটা দাগে হয়েছে।  ফলে প্রথমে তিনটি ভোটকেন্দ্রে, এরপরে ১৬টি কেন্দ্র এবং তৃতীয় দফায় ১২টি কেন্দ্র বন্ধ করা হয়। চতুর্থ দফায় কয়টি এবং সর্বশেষ আরও তিনটিসহ মোট ৪৩টি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, কতগুলো কেন্দ্রে সিসিটিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে আমরা তথ্য সংগ্রহ করতে পারছিলাম না। পরে মোট ৫০টি ভোটকেন্দ্র বন্ধ করা হয়। এছাড়া রিটার্নিং অফিসারও একটি কেন্দ্রে ভোট বন্ধ করেন। আমরা নিশ্চিত হই—৫০টি কেন্দ্রের ভোট বন্ধ হয়ে গেলে বাকি সব কেন্দ্রের পরিবেশ বিচার করে সঠিক মূল্যায়ন হবে না।

সিইসি বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে ভোটগ্রহণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কোনও একটি পক্ষ বা কোনও একটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী প্রভাবিত করতে পারছেন। ফলে ইমপার্শিয়ালি, ফেয়ারলি ভোটগ্রহণ হচ্ছে না। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, ‘আরপিওর ৯১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কমিশনের কাছে যদি প্রতীয়মান হয় ভোটগ্রহণ সঠিকভাবে হচ্ছে না, ফেয়ারলি হচ্ছে না, তাহলে নির্বাচন কমিশন সব ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দিতে পারে। আমরা পরিশেষে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পুরো নির্বাচনি এলাকা গাইবান্ধা-৫-এর ভোট কার্যক্রম আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। পরবর্তীকালে আমরা দেখবো বিধিবিধান অনুযায়ী কী করতে হবে। আমরা কমিশন বসে আইন-কানুন পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।

উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। এর দুদিন পর তার সংসদীয় এ আসন শূন্য ঘোষণা করে সংসদ সচিবালয়। এ আসনের উপনির্বাচনে মোট পাঁচ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মাহমুদ হাসান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবার রহমান।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর