গাইবান্ধায় উপনির্বাচন বন্ধের ব্যাখ্যা দিলেন সিইসি

১৩ অক্টোবর ২০২২

আলোচনা-সমালোচনার মুখে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। বলেছেন, বন্ধের সিদ্ধান্ত ভোটগ্রহন প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে প্রত্যক্ষ করে, চিন্তাভাবনা নেওয়া হয়েছে। হঠকারী কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।  নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পেছনে যৌক্তিকতা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

সিইসি বলেন, এ নির্বাচন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। সেই বিভ্রান্তি অবলোপনের জন্য কিছু ব্যাখ্যা দেওয়া ইসির দরকার। তিনি  বলেন, ‘আমরা টকশোতে শুনেছি—কেউ আনন্দিত হয়েছেন, কেউ ব্যথিত হয়েছেন, কেউ প্রতিবাদ করেছেন, কেউ সমবেদনা জানিয়েছেন।  সিইসি বলেন, এ সিদ্ধান্ত সিইসি এককভাবে গ্রহণ করেননি, কমিশন গ্রহণ করেছে। সিইসি কোনও সিদ্ধান্ত এককভাবে গ্রহণ করেন না, করতেও পারেন না। কমিশন সদস্যরা বসে আলাপ-আলোচনা করে, চিন্তাভাবনা করে যৌথভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সিইসি কাজী আউয়াল জানান, নির্বাচন ভবনে আধুনিক একটি পর্যবেক্ষণ কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আধুনিক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতিটি কেন্দ্রে কীভাবে নির্বাচন হচ্ছে তা নিবিড়ভাবে প্রত্যক্ষ করা যায়। এখানে স্থানে (ঘটনাস্থলে) থাকার চেয়ে আরও বেশি নিবিড়ভাবে দেখার সুযোগ আছে।

ভোট বন্ধের ব্যাখ্যায় সিইসি বলেন,  ভোটকক্ষে প্রার্থীর পুরুষ এজেন্টরা একই রকম গেঞ্জি, বুকে ও পিঠে প্রার্থীর মার্কা ইত্যাদি প্রিন্ট করা পরে আছেন এবং মহিলা এজেন্টরা একই রকম শাড়ি পরা— যা আচরণবিধিমালা ভঙ্গের মধ্যে পড়ে। অনেক অবৈধ লোকজন ভোটকক্ষে অবস্থান করে ভোটারদের ভোট দিতে প্রভাবিত করছেন। ভোটারদের কন্ট্রোল ইউনিটে আঙুলের ছাপ দেওয়ার পরপরই এজেন্টরা গোপন ভোটকক্ষে প্রবেশ করে ভোটারকে ভোটদানের সুযোগ না দিয়ে নিজেই ভোট দিয়ে দিচ্ছেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের মধ্যেও কেউ কেউ একই কাজ করছেন। এসব নির্বাচন কমিশন ভবনে কন্ট্রোল রুম থেকেই দেখা যাচ্ছিল। তিনি জানান, কমিশন থেকে ফোন দিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারদের ভোটকক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ভোটকক্ষের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কোনও কার্যকর পদক্ষেপ তাদের গ্রহণ করতে দেখা যায়নি, পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। তাই কমিশন মনে করে, এ ধরনের একটি আইনবহির্ভূত ভোট গ্রহণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ফলে বেলা আড়াইটায় গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এ উপনির্বাচন যেন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, সে জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছিল- যোগ করেন সিইসি। সিইসি বলেন, অনিয়ম তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে তাদের। প্রতিবেদন পাওয়ার পরে গাইবান্ধা-৫ আসনের পরবর্তী নির্বাচন বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর