দেশে ডিম ব্যবসায় জনগণকে জিম্মি করার কোনো প্রচেষ্টা থাকলে সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। এ ব্যবসায় মনোপলি ব্যবস্থা থাকতে পারবে না। সরকার যেমন উৎপাদকদের লোকসানে ডিম বিক্রি করতে বলতে পারে না। ঠিক সেভাবেই অতি মুনাফালোভীদের অতিরিক্ত মুনাফা লুটতে দেওয়া হবে না। এমনটাই জানালেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম। ১৪ (অক্টোবর) বিশ্ব ডিম দিবস-উপলক্ষে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় এ প্রসঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।
‘প্রতিদিন একটি ডিম, পুষ্টিময় সারাদিন’- এ প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশে এবার দিবসটি পালিত হয়। দিবসটি পালনে দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় শহর এবং চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার, ডিমের পুষ্টিগুণবিষয়ক জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, বিদ্যালয় ও এতিমখানায় ডিম বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছিল।
ডিমের সিন্ডিকেট নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনা তাঁর মন্ত্রণালয়ের অধীনে নয়। এ জন্য আলাদা কর্তৃপক্ষ আছে। তারা ডিমের দাম সহনীয় রাখার বিষয়টি নজরদারিতে নিলে সবার জন্যই উপকার হয়। মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম জানান, ডিম যেহেতু সবার জন্য উপকারী। তাই এর দাম সহনীয় রাখতে পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েসন, ভোক্তা অধিকার ও বাজার ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উইং, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার, এ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে।
মন্ত্রী জানান, জায়গা ভেদে একেক জিনিসের একেক দাম। দেশের সবার ক্রয় ক্ষমতাও সমান নয়। কিন্তু অ্যানিমাল ও ফিস ফিড সেক্টরে জড়িতদের নানাভাবে সহায়তার চেষ্টা করছে বর্তমান সরকার। এ সব ক্ষেত্রে আমদানিতে উৎসকর মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রেরও কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে, চাইলেই নিজে উৎপাদন ও বিপণন করতে পারে না। তাই সমন্বয়ের কাজটি করা হচ্ছে- যোগ করেন প্রাণি সম্পদমন্ত্রী।
এদিকে সভায় বক্তরা বলেন- বিশ্বব্যাপী ডলার, ডিজেল, গম এবং আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আসা পোল্ট্রি ফিডের দাম বেড়ে গেছে। এতে দেশের বাজারে ডিমের দাম উর্ধ্বমুখী। তবে ডিমের দাম অধিদফতরের নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত, দাম কমানো সম্ভব। সরকার সহায়তা দিলে অবশ্যই ডিমের দাম কমবে। তারা আরো বলেন, ক্যালরি কম ও কোনো ট্রান্সফ্যাট না থাকায় উচ্চমানের প্রোটিন সমৃদ্ধ ডিম সব বয়সের মানুষের জন্য উপকারি। এটা ভোক্তার কাছে পৌঁছাতেই হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ও ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মশিউর রহমান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বজলুর রহমান মোল্লা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ প্রমুখ।
এমকে