গত আট মাস ধরে ইউক্রেনকে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দিয়ে যাচ্ছিল ইলন মাস্কের কোম্পানি স্পেসএক্স। ইলনের স্টারলিংক ইন্টারনেট সার্ভিসই ছিল ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকদের একমাত্র ভরসা। তবে আর দেবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তিনি চান, এই সেবা দিতে গিয়ে স্পেসএক্সের যে ব্যয় হচ্ছে তা পেন্টাগন বহন করুক।

বিবিসির রিপোর্টে বলা হয়, এরইমধ্যে পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মাস্ক। এক টুইটে তিনি বলেন, স্পেসএক্স মোটেও এতদিনের সেবার জন্য কোনো অর্থ নিচ্ছে না। তবে আজীবনের জন্য বিনামূল্যে সেবা দিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। এতদিন এ স্যাটেলাইট ইন্টারনেটই ইউক্রেনীয়দের অনলাইনে থাকতে সাহায্য করেছে। তাছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধেও বড় ভূমিকা রেখেছে স্টারলিংক।

১০ অক্টোবর ইউক্রেনের শহরগুলোতে রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক মিসাইল হামলার পরও স্টারলিংকের ইন্টারনেটের কারণে মানুষ অনলাইনে থাকতে পেরেছিল। তবে ইউক্রেনকে বিনামূল্যে সেবা দিতে গিয়ে প্রতি মাসে ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে মাস্ককে। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের জন্য ৮০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন তিনি। তবে এখন আর এ অর্থ তিনি বহন করতে রাজি নন। সম্প্রতি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও কর্মকর্তারা ইলন মাস্কের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ার পরই তার এ সাহায্য বন্ধের ঘোষণা আসল।

মাস্ক বলেছেন, টার্মিনাল ছাড়াও স্যাটেলাইট ও গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি, উৎক্ষেপণ, রক্ষণাবেক্ষণ প্রভৃতির প্রয়োজন হয়। তাদের সাইবার আক্রমণ এবং জ্যামিংয়ের বিরুদ্ধেও কাজ করতে হচ্ছে, যা ক্রমেই আরও কঠিন হয়ে উঠছে। অবশ্য মাস্কের সঙ্গে কিয়েভ প্রশাসনের উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করেছেন ইউক্রেনীয় উপ-প্রধানমন্ত্রী মিখাইলো ফেদোরভ। তিনি টুইটারে বলেছেন, অবশ্যই ইউক্রেনকে সহায়তাকারী বিশ্বের শীর্ষ বেসরকারি দাতাদের মধ্যে একজন ইলন মাস্ক। স্টারলিংক আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য উপাদান।

কয়েক দিন আগেই টুইটারে ইলন মাস্ক বলেন, ইউক্রেনের উচিৎ যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করা। এ জন্য ভূমি হারাতে হলেও তা মেনে নেয়া উচিৎ কিয়েভের। ইলন মাস্ক টুইটারে প্রস্তাব করেছিলেন, ইউক্রেন ক্রিমিয়াকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্তি এবং অধিকৃত এলাকাগুলোতে গণভোট মেনে নিক। ক্রেমলিন মাস্কের প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় কিয়েভ।