সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলকে সক্রিয় করার তাগিদ

২২ অক্টোবর ২০২২

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতি বছর বিশ্বে  সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ লাখ জন মারা যায়। বাংলাদেশে মারা যায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতির পরিমাণ ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। অন্যদিকে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, সড়কে প্রতিদিন ৬৪ জনের প্রাণহানি ঘটছে। বেসরকারি সংগঠন যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য বলছে, দেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ হাজার ৩৬০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলকে সক্রিয় করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তাগিদ দেয় বাংলাদেশ  যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার বিধান দ্রুত চালুর দাবি জানানো হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান আর নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান সরকার তার মেয়াদের প্রায় শেষ প্রান্তে চলে এসেছে। কিন্তু, নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী, নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য কোনও পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি। ফলে প্রতিদিন প্রাণহানি ঘটছে সড়কে।

সমিতির হিসাবে, প্রতি বছর প্রাণহানির বাইরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ আহত হন। প্রায় ৮০ হাজার মানুষ প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ছেন। এর মধ্যে ১২ হাজারের বেশি ১৭ বছরের কম বয়সী শিশু। প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ প্রতিবন্ধী হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মারা যাওয়াদের মধ্যে বেশি আছে কর্মক্ষম ব্যক্তিরা। এর প্রভাব পড়ছে জাতীয় অর্থনীতিতে। হতাহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে। বুয়েটের এআরআইয়ের হিসাবের বরাত দিয়ে জানানো হয়, গেল তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যাটা নির্ভরশীল মানুষের তুলনায় বেশি হলে সেটাকে জনসংখ্যার বোনাস (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) বলা হয়। দেশের গর্বের জায়গাটা হচ্ছে এ বোনাস। অথচ সড়ক দুর্ঘটনা এ জায়গাতেই বেশি আঘাত হানছে। এআরআই বলছে, গত এক দশকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আর সাড়ে ১৮ শতাংশ শিশু, এদের বয়স ১৫-এর নিচে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন কর্মক্ষম ব্যক্তি প্রাণ হারালে ২৪ লাখ ৬২ হাজার ১০৬ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়। সেই হিসাবে প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির পরিবার এ পরিমাণ ক্ষতিপূরণ রাষ্ট্র থেকে পাওয়ার হকদার। যদিও সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক সহায়তা তহবিল হতে নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ও আহত ব্যক্তিকে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কিন্তু আইনটি কার্যকরের ৩ বছরের মাথায়ও এ ক্ষতিপূরণ প্রদানের কার্যক্রম শুরু করা হয়নি।

এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর