কাতার বিশ্বকাপ: সঙ্গিনীকে প্রকাশ্যে আলিঙ্গন-চুম্বনে জরিমানা

১৫ নভেম্বর ২০২২

দরজার কড়া নাড়ছে ফুটবল বিশ্বকাপ। আর বাকী মাত্র কয়েক দিন। ২০ নভেম্বর পর্দা উঠবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুটবল আসরের। প্রায় ১২ লক্ষ ফুটবলপ্রেমী কাতারে বিশ্বকাপের খেলা দেখতে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কাতারের কঠোর আইন-কানুন মেনে চলতে হবে তাদের। মধ্য প্রাচ্যের দেশটির কিছু আদবকায়দাও জেনে রাখা জরুরি।

 

প্রকাশ্যে কারও সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় দাঁড়িয়ে করমর্দন করাই ভালো। বিশেষ করে বয়সে বড় কারও সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় দাঁড়ানো এক রকম বাধ্যতামূলক। কোনো মহিলার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার সময় নিজে থেকে করমর্দনের জন্য হাত না বাড়ানোই ভালো। বরং সেই মহিলার প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করা উচিত। তিনি করমর্দনের জন্য আগ্রহ দেখালেই শুধু হাত বাড়ানো যেতে পারে। কারণ কাতারের অধিকাংশ মহিলাই অন্য পুরুষের স্পর্শ এড়িয়ে চলেন। সুতরাং আগ বাড়িয়ে হাত না বাড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। নিরাপদ থাকতে ডান হাত নিজের হৃৎপিণ্ডের উপর রাখতে পারেন। কাতারের সমাজে এভাবেও সৌজন্য বিনিময়ের রীতি রয়েছে।

 

বান্ধবী বা স্ত্রীকে নিয়ে বিশ্বকাপ দেখতে গেলে রাস্তায় তার হাত ধরে হাঁটতে পারেন। প্রকাশ্যে জড়িয়ে না ধরাই ভালো। প্রিয় দলের জয়ের আনন্দে তাকে কিন্তু চুম্বন করে ফেলবেন না। তা হলেই বিপদ। প্রকাশ্যে চুম্বন এ দেশে অপরাধ।

 

ইংরাজিতে আপনি চোস্ত হতেই পারেন। কিন্ত সব জায়গায় ইংরেজদের ভাষা ব্যবহার করলে হবে না। কারণ কাতারের অধিকাংশ মানুষই ইংরাজিতে সাবলীল নয়। কাতারে পৌঁছে প্রয়োজনীয় কিছু স্থানীয় শব্দ শিখে নিলে সুবিধা হবে।

 

ভাগ্য ভালো থাকলে কাতারের কোনও নাগরিকের আমন্ত্রণও পেতে পারেন। তার বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েও কিছু বিষয় মনে রাখা জরুরি। প্রথমত, জুতো পরে তার বাড়িতে ঢুকবেন না। এতে গৃহকর্তা অপমানিত বোধ করতে পারেন। বাইরে জুতো খুলে বাড়ির ভিতরে যাবেন। কখনই পায়ের উপর পা তুলে বসবেন না। তা হলে আপনার সম্পর্কে খারাপ মনোভাব তৈরি হবে পরিবারের সদস্যদের।

 

কাতারের মানুষরা সাধারণত একটি বড় পাত্র থেকেই ভাগ করে খাবার খান। পাত্রের চারদিকে সকলে এক সঙ্গে বসেন। সেখান থেকে নিয়েই একসঙ্গে খান। অতিথিকেও তারা এভাবেই আপ্যায়ন করেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক পাত্র থেকেই খান অতিথিরাও।

 

পানীয় হিসেবে কফি পছন্দ হলে কোনো সমস্যা নেই। কাতারের মানুষেরও প্রিয় পানীয় কফি। যদিও পছন্দের কফি পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। কাতারের মানুষ কফি তৈরি করেন একটু অন্যরকমভাবে। প্রথমে হালকা আঁচে গোটা কফি সেঁকে নেন তারা। সেগুলিকে জলে ফোটানো হয়। তাতে মেশানো হয় ছোট এলাচ এবং জাফরান। এ কফি ছোট পাত্রে পরিবেশন করা হয় খেজুরের সঙ্গে। প্রথমে এ কফি দিয়েই আপ্যায়ন করা হয় অতিথিদের। এ কফি ফিরিয়ে দেওয়ার অর্থ গৃহকর্তাকে অপমান করা। কফির পাত্র অবশ্যই ডান হাতে ধরতে হবে। বাঁহাতে কফি পান করা কাতারে অভদ্রতা। যতক্ষণ না পাত্র নাড়িয়ে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, ততক্ষণ খালি হয়ে যাওয়া পাত্রে আবার কফি দিয়ে দেওয়া হয়।


মন্তব্য
জেলার খবর