শ্রীলঙ্কায় তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে যে সহিংস বিক্ষোভ চলছে, তা সামাল দিতে সরকার দেশজুড়ে ৩৬ ঘণ্টার জন্য কারফিউ জারি করেছে। রাজধানী কলম্বোতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই সান্ধ্য আইন জারি আছে।
এর আগে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে সামরিক বাহিনী তলব করেছেন। দু'দিন আগে প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বাসভবনের আশেপাশে গড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক সহিংসতার পর দেশটিতে সর্বশেষ এসব ব্যবস্থা নেওয়া হলো, যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য সহিংস প্রতিবাদ বন্ধ করা।
এরপর থেকেই দেশটিতে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই সন্দেহভাজন যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
এশিয়া বিষয়ক বিবিসির সম্পাদক আয়েশা পেরেরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসা যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন তাতে অনেকেই স্তম্ভিত হয়েছেন। ব্যতিক্রমধর্মী হুমকি, বিপদ অথবা বিপর্যয়ের মধ্যে জরুরি অবস্থা জারি করার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে ইস্টার সানডেতে গির্জায় বোমা হামলার পর জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। এ আইনে কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই লোকজনকে আটক করা যায়। এছাড়াও লোকজনের চলাচল ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপরেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
এর ফলে লোকজনের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে সরকার এখন হয়তো প্রতিবাদকারীদের ওপর আরো বেশি মারমুখী হয়ে উঠতে পারে। এ আইন জারির বিরুদ্ধে আদালতে কোনো চ্যালেঞ্জ করা যাবে না, যদিও এটি ঘোষণার ১৪ দিনের মধ্যে পার্লামেন্টে অনুমোদন করাতে হবে। সংসদে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এটি পাস করাতে তেমন অসুবিধা হবে না।
অর্থনীতিবিদরা এর জন্য কোভিড মহামারির কারণে পর্যটনে ধ্বস এবং বৈদেশিক মুদ্রার অভাবকে দায়ী করছেন, যা দিয়ে জ্বালানি আমদানির মূল্য পরিশোধ করা হয়।
এর ফলে দেশটিতে বড় ধরনের বিদ্যুৎ সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময়েই এখন বিদ্যুৎ থাকে না। জ্বালানি ছাড়াও খাদ্য এবং ওষুধপত্রেরও অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি