গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ক্যামেরুনের কাছে হেরে শেষ ষোলোয় উঠেছিল ব্রাজিল। তাই শঙ্কা দিানা বেধেছিল ভক্তদের মনে- না জানি হেরে যায় কিনা। সুপার ষোলোর লড়াই দুর্দান্ত খেলেছে নেইমাররা। এদিন ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করেছে ব্রাজিল।
দক্ষিণ কোরিয়া শেষ ম্যাচে পর্তুগালের মতো দলকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় উঠেছিল। কিন্তু ব্রাজিলের বিরুদ্ধে প্রথমার্ধে খুঁজেই পাওয়া গেল না সন হিউং মিনের দলকে। তাদের ডিফেন্স তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল। আর সেই সুযোগে খেলাচ্ছলে একের পর এক গোল করে গেল ব্রাজিল। ভিনিসিয়াসকে দিয়ে শুরু। তারপর একে একে গোল করেন নেইমার, রিচার্লিসন ও লুকাস পাকুয়েতার।
ইনজুরিতে থাকায় নেইমারের ফেরা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু রোববার সংবাদ সম্মেলনে সুখবর দেন ব্রাজিল কোচ তিতে।কোরিয়ার বিরুদ্ধে দলে রাখতে পারেন নেইমারকে। তবে প্রথম একাদশে রাখার ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে পারেননি। এ দিন প্রথম এগারোতেই পাওয়া গেল নেইমারকে। ক্যামেরুন ম্যাচের দল আমূল বদলে দিলেন তিতে।
দলে ব্যাপক পরিবর্তন ভালো ফল বয়ে আনে এদিন। খেলতে নামার ৭ মিনিটের মধ্যেই গোলের দেখা পায় ব্রাজিল। দুর্দান্ত আক্রমণে গোল করলেন ভিনিসিয়ার জুনিয়র। ডান দিক থেকে অসাধারণ পাস দিয়েছিলেন রাফিনহা। দক্ষিণ কোরিয়ার পায়ের জঙ্গল পেরিয়ে বল গিয়ে পৌঁছয় বাঁ দিকে দাঁড়িয়ে থাকা ভিনিসিয়াসের কাছে। ভিনিসিয়াস কিছুক্ষণ থমকে নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান। দলের গোলের পর সাইডলাইনের ধারে গিয়ে সারিবদ্ধভাবে নেচে গেয়ে গোল উৎযাপন করেন।
এর তিন মিনিট পর আরেটি সুযোগ আসে ব্রাজিলের। পেনাল্টি পায়। রিচার্লিসনকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবলার। গোলকিপারকে বিভ্রান্ত করে গোলে বল ঢোকাতে একটু ভুল করেননি নেইমার। ডান দিক-বাঁ দিক করে নেইমারকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিলেন কোরিয়ার গোলকিপার। তা কাজে লাগেনি। কিপারকে উল্টো দিকে ঠান্ডা মাথায় গোল করলেন নেইমার। এ বারের বিশ্বকাপে তার প্রথম গোল হয়ে গেল।
২৯ মিনিটের মাথায় কোরিয়ার গোলকিপারকে পরাস্ত করেন ব্রাজিলের রিচার্লিসন। মাথায় বল নিয়ে জাগলিং করে সঙ্গে সঙ্গে পাস দেন মার্কুইনোসকে। তিনি পাস দেন থিয়াগো সিলভাকে। থিয়াগোর ঠিকানা লেখা পাস জমা পড়ে রিচার্লিসনের পায়ে। বাঁ পায়ে গোল করেন রিচার্লিসন। বিশ্বকাপে তৃতীয় গোল হলো তার।
গোলের যেন ফুলঝুরি ঝরাচ্ছিল ব্রাজিল। তৃতীয় গোলের ঠিক সাত মিনিট পর আবার গোলের দেখা পায় তিতের দল। এবার গোল করেন পাকুয়েতার। প্রথমার্ধেই ৪ গোল দিয়ে বড় জয়ের আভাস দেয় ব্রাজিল। পরের অর্ধে অবশ্য আর কোনো গোল করতে পারেনি। তবে একটি গোল শোধ করতে সক্ষম হয় কোরিয়া। ৭৫ মিনিটে কোরিয়ার হয়ে গোলটি করেন পাইক সিউং হো।
প্রথমার্ধে কোরিয়াকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও দ্বিতীয়ার্ধে বরং তাদের খেলা অনেক বেশি ছন্দবদ্ধ। অনেক বার আক্রমণে উঠে এসেছে তারা। কপাল ভাল থাকলে আর একটা গোল পেয়ে যেতে পারত। ব্রাজিলও অনেকটা গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে খেলে। নেইমার-সহ অনেক ফুটবলারকে বদলে দেন তিতে। এমনকি, তৃতীয় গোলকিপার ওয়েভারটনকেও নামিয়ে দেন তিনি।