শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমি ফাইনালে পৌঁছে গেল আর্জেন্টিনা। প্রথমে দুই গোল করে এগিয়ে যায় মেসিরা। ২ গোলে এগিয়ে থাকায় নীল-আকাশীদের জয়ী মেনে নিয়েছিল ভক্তরা। কিন্তু সে গোল ঠিকই শোধ করে সমতায় ফেরে ডাচরা। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও কোনো দল আর গোল করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তাই টাইব্রেকারে হয় ম্যাচের ফয়সালা। নেদারল্যান্ডসকে ৪-৩ ব্য়বধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে গেলেন মেসিরা।
দুদলই ভালো শুরু করছিল। নিজেদের রক্ষণভাগ সামলে বার বার অপর পক্ষের গোলে বারবার আক্রমণ করে যাচ্ছিল। কিন্তু গোলের দেখা মিলছিল না। প্রথম ২০ মিনিটের মধে্য দু’বার আর্জেন্টিনার বক্সে ঢুকে পড়েন মেম্ফিস দেপাই, কোডি গাকপোরা। কিন্তু জালে বল গলাতে পারেননি। অন্যদিকে থ্রু বলে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করছিল আর্জেন্টিনা। মেসির পায়ে বল পড়লেই অন্তত তিন জন মিলে তাকে আটকানোর চেষ্টা করছিলেন। তার মধ্যেই একবার ছিটকে বেরিয়ে দূর থেকে শট মারেন মেসি। কিন্তু গোল উঁচিয়ে সেই বল বেরিয়ে যায়।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটে গোল করে আর্জেন্টিনা। প্রায় ৩০ গজ দূরে বল ধরেন মেসি। ঘাড়ের কাছে চার জন ডিফেন্ডারকে নিয়ে সামনের দিকে এগোন। তারপর কোনাকুনি বল বাড়ান বক্সে থাকা মোলিনার দিকে। বল ধরে আগুয়ান গোলরক্ষকের ডানদিক থেকে বল জালে জড়িয়ে দেন মোলিনা। প্রথমার্ধে কোনো দল আর গোল করতে পারেনি। ফলে ১-০ গোলে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে নেদারল্যান্ডস। দু’প্রান্ত ব্যবহার করে আক্রমণে উঠছিলেন গাকপোরা। কিন্তু আর্জেন্টিনার বক্সে সে রকম বিপদ তৈরি হয়নি। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে খেলায় ফেরে আর্জেন্টিনা। মেসির পায়ে বেশ কয়েক বার বিপদ তৈরি হয় নেদারল্যান্ডসের বক্সে। মেসির পাস থেকে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ম্যাক অ্যালিস্টার। ৬৩ মিনিটের মাথায় ফ্রিকিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির শট একটুর জন্য বাইরে বেরিয়ে যায়।
৭১ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে আকুনাকে ফাউল করেন ডেঞ্জিল ডামফ্রিস। পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফস্কালেও এবার গোল করতে ভুল করেননি মেসি। গোলরক্ষকের বাঁ দিক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। ২-০ এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
খেলার এমন পরিস্থিতিতে মেসি ভক্তরা আর্জেন্টিনা জয়ীই ধরে নিয়েছিলেন। কিন্তু গোল ডাচরা শোধ করা শুরু ৮৩ মিনিট থেকে। প্রথম গোলটি করেন উইঘর্স্ট। ডান প্রান্ত ধরে ক্রসে দুরন্ত হেড করেন তিনি। বল মাটিতে পড়ে গোলে ঢুকে যায়। মাঝেমধ্যেই খেলার মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ছিল। হাতাহাতিতে জড়াচ্ছিলেন দু’পক্ষের ফুটবলাররা। ফলে সময় নষ্ট হচ্ছিল। ১০ মিনিট সংযুক্তি সময় দেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে বার বার আর্জেন্টিনার বক্সে আক্রমণ করে নেদারল্যান্ডস। শেষ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে গোল করে সমতা ফেরান সেই উইঘর্স্ট। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু কোনো আর গোল না পাওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এতে ৪-৩ গোলের জয় পায় আর্জেন্টিনা।