অনুপাত কমেছে মূলধনের

১০ এপ্রিল ২০২২

সময়ের হিসাবে প্রায় এক দশক ধরে সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত কমছে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে। শুধু তাই নয়, এ খাতে বিশ্বের ছোট-বড় প্রায় সব দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। অথচ ব্যাংকের শক্তি বা অর্থনৈতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা পরিমাপ করা হয় এ মূলধনের ভিত্তিতে। আমানতকারীদের অর্থের সুরক্ষা, ব্যাংকের স্থিতিশীলতা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা পরিমাপের মাপকাঠিও এ মূলধন। বাংলাদেশে ব্যাংক মূলধনের এমন পরিস্থিতির কথা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক।

ব্যাংকিং পরিভাষায়, আমানতের অর্থ থেকে গ্রাহকদের দেওয়া ঋণটিও ব্যাংকের সম্পদ। আর ব্যাংকের উদ্যোক্তা তথা শেয়ারহোল্ডারদের জোগান দেওয়া পরিশোধিত মূলধন, বিভিন্ন ধরনের রিজার্ভ ও রিটেইন আর্নিংস হচ্ছে মূলধন। অর্থনীতির বিশ্লেষকরা মনে করেন, মূলধন কম থাকলে আমানতকারীদের অর্থ ঝুঁকিতে থাকে। মূলধন কম থাকলে যত বড় ব্যাংকই হোক, টেকসই হবে না। সম্পদের বিপরীতে মূলধন কম থাকার অর্থ ব্যাংকগুলো দুর্বল। স্থিতিশীল ব্যাংক ব্যবস্থার জন্য মূলধন সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করছেন তারা।

বিশ্বব্যাংকের পর্ালোচনা হচ্ছে- বাংলাদেশের চেয়ে  দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাংকগুলোর সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত এখন অনেক বেশি। এমনকি অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কারও বেশি। পর্ালোচনাকালে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ব্যাংকে সাধারণ গ্রাহকদের আমানতের সঙ্গে সম্পদের সামঞ্জস্য রেখে বেড়েছে মূলধন। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে দ্রুত আমানত বাড়লেও সে অনুপাতে মূলধন বৃদ্ধি তো পায়ইনি, বরং উল্টো কমেছে।

বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে ব্যাংক খাতে সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত প্রায় ৭ শতাংশ ছিল ২০১১ সালে । ২০২০ সালে এসে এ অনুপাত (ক্যাপিটাল টু অ্যাসেট রেশিও) দাঁড়ায় ৪ দশমিক ৮ শতাংশে। অথচ শ্রীলঙ্কায় এ অনুপাত ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, ভারতে ৮ দশমিক ১ শতাংশ, পাকিস্তানে ৭ দশমিক ২ শতাংশ চীনে ৯ দশমিক ২ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১১ শতাংশ। এমনকি নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপে মূলধন সক্ষমতা বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০ সাল শেষে দেশের ব্যাংক খাতের সম্পদ ছিল সবমিলে ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা মূলধন ও শেয়ারহোল্ডার ইকুইটি। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে বলেন, দেশে আগে থেকেই  মূলধন কাঠামোটা দুর্বলতায় ভুগছে এ খাতে।সেই সঙ্গে নতুন ব্যাংকগুলো দ্রুত ব্যবসায়িক পরিধি বড় করায় মূলধনের চেয়ে সম্পদ বাড়ছে।

এমকে

 

 


মন্তব্য
জেলার খবর