চোখের পানিতে টেনিসকে বিদায় জানালেন সানিয়া। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের পর তিনি তার বিদায়ের কথা জানান। সানিয়া বলেন, “আমার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল মেলবোর্নে। আর তাই ক্যারিয়ার শেষের জন্য এরচেয়ে ভালো জায়গা আর হয় না।”
মেলবোর্নের রড লেভার অ্যারেনায় ২০০৫ সালে পেশাদার টেনিসে স্বপ্নময় যাত্রা শুরু করেছিলেন সানিয়া মির্জা। মাঝে কেটে গেছে ১৮টি বসন্ত। সেদিনের ১৮ বছর বয়সী তরুণী পা রেখেছেন ৩৬ বছরে। অনুভব করলেন, এবার বিদায় বলার পালা। এর জন্য বেছে নিলেন শুরুর মঞ্চকেই।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে নারী এককের শিরোপা জেতা হয়নি কখনও। মিক্সড ডাবলস জিতেছেন ছয়বার। তাই দিয়েই ভারতীয়দের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। হয়ে উঠেছিলেন, ভারতের টেনিস ‘কুইন’। পথ দেখিয়েছেন, হাজারও তরুণীকে। ভারতীয় নারীদের টেনিসের পথ দেখিয়ে এবার নিজেই ছাড়লেন টেনিস কোর্ট।
অবশ্য টেনিস জীবনের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় দিয়ে শেষ করতে পারলেন না সানিয়া মির্জা। মিক্সড ডাবলস ফাইনালে হেরে গেছেন তিনি। মিক্সড ডাবলসের ফাইনালে ব্রাজিলের স্টেফানি-মাতোস জুটির কাছে ৬-৭ (২-৭), ২-৬ ব্যবধানে হেরেছেন রোহন বোপান্না-সানিয়া জুটি। হারের পর আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না। টেনিস জীবনের কথা বলার সময় কেঁদে ফেললেন সানিয়া।
বিদায়ের বার্তা দিয়ে সানিয়া বলেছেন, ‘আমি কাঁদছি। এটা আসলে খুশির কান্না। চোখের এই জল দুঃখের নয়। চাইলে আরও দুটি প্রতিযোগিতা খেলতেই পারতাম। ২০০৫ সালে মেলবোর্ন থেকেই টেনিস যাত্রা শুরু করেছিলাম। তখন আমার বয়স ছিল ১৮। সেরিনা উইলিয়ামসের সঙ্গে খেলেছিলাম। আমার জীবনে রড লেভার এরিনার আলাদা জায়গা রয়েছে। গ্র্যান্ড স্ল্যাম ক্যারিয়ার শেষ করার জন্য এর থেকে ভাল জায়গা আমার কাছে নেই।’
এবারের লড়াইটা ছেলে ইজহানের সামনে লড়েছেন সানিয়া। ৪ বছর বয়সী ইজহান ফাইনালে ম্যাচের সর্বক্ষণই উৎসাহ জুগিয়েছেন মাকে। সানিয়া স্মরণ করলেন সেই কথাও, ‘কখনো ভাবিনি সন্তানের সামনে গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনাল খেলব, এ রকম বিশেষ জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্যারিয়ারকে বিদায় জানাতে পারব। মনে হয়েছে, আমি বাড়িতে আছি। এমন অনুভূতি উপহার দেওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ।’