তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল নির্মাণ সম্প্রসারণে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। এ টার্মিনাল সম্প্রসারণে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব পেয়েছে এ দেশ। দেশে বর্তমানে বছরে ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন টন এলএনজি সরবরাহ সক্ষমতার টার্মিনাল রয়েছে। রয়েছে ১৫ দশমিক ১ মিলিয়ন টনের বিনিয়োগ প্রস্তাব। যদিও ২৬ দশমিক ৩ মিলিয়ন টন সক্ষমতার এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রস্তাব করা হয়েছে প্রত্যাখ্যান। জ্বালানি খাতের মার্কিন তথ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল এনার্জি মনিটরের’ এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। ‘অ্যামিড মার্কেট টারমইল, এশিয়াস লিকুইফায়েড ন্যাচারাল গ্যাস প্ল্যানস রিচ এ ফরক ইন দ্য রোড’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গত ডিসেম্বরে প্রকাশ হয়।
প্রতিবেদন বলছে, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ সম্প্রসারণের তালিকায় শীর্ষের অবস্থান চীনের। দ্বিতীয় জায়গা ভারতের দখলে। দেশ দুটির এ টার্মিনাল নির্মাণে প্রস্তাব রয়েছে যথাক্রমে ৭২ দশমিক ১ বিলিয়ন ও ১০ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। আর পাকিস্তানের অবস্থান ৬ নম্বরে, দেশটি প্রস্তাব পেয়েছে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার।
জানা গেছে, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে ১০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ সক্ষমতার দুটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে পেট্রোবাংলার কাছে। খুব দ্রুতই এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগ থেকে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও এ খাতের অবকাঠামো নির্মাণে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ ও জ্বালানি উৎস পাওয়া না গেলে অর্থনৈতিক সুফল মেলানো কঠিন হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে এলএনজি সরবরাহের জন্য দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট সক্ষমতার দুটি এলএনজি টার্মিনাল আছে। দুটি টার্মিনালের অবস্থান কক্সবাজারের মহেশখালীতে। এলএনজির বিদ্যমান অবকাঠামোয় দেশে এখন পুরোদমে গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বিদ্যমান সক্ষমতার বিপরীতে সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ৪০ কোটি ঘনফুটের কিছু বেশি। ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো জ্বালানি সংকটে পড়ছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) হিসাবে, দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে সাড়ে ১১ হাজার। কিন্তু উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জ্বালানি সংকটে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার মেগাওয়াটের বেশি কেন্দ্র চালাতে পারছে না। জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে সাড়ে সাত হাজার মেগাওয়াটের। বিপরীতে উৎপাদন রয়েছে মাত্র ২ হাজার ১০০ মেগাওয়াটের মতো। রামপালের ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালানো যাচ্ছে না কয়লা সংকটে। পায়রার ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রও আছে বন্ধের ঝুঁকিতে। ফলে জ্বালানি সংকটে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় রেশনিং করতে হচ্ছে বিদ্যুতের। ফলে শীতেও করতে হচ্ছে লোডশেডিং। এমন পরিস্থিতিতে গ্রীষ্ম ও রমজানে বিদ্যুতের ঘাটতি বাড়বে আশঙ্কা রয়েছে।
এমকে