স্কুলের পাশে ইটভাটা, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:

সরকারি বিধি নিষেধের তোয়াক্কা না করে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ১৪৭ নম্বর সাবদুল সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই চলছে এক ইটভাটা। ইকো ব্রিক্স নামের এ ইটভাটার কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিন দেখা যায়, সারি সারি কাঁচা ইট রাখা হয়েছে স্কুলটির সীমানা ঘেঁষেই। পাশেই ভাটার চিমনিতে পোড়ানো হচ্ছে ইট। মাটি, জ্বালানি ও ইট বোঝাই ট্রাক একের পর এক যাওয়া আসা করছে স্কুলের পাশ দিয়ে। যানবাহনের বিকট শব্দ, আর ধোঁয়া ও সড়কের ধুলায়  একাকার চারিদিক। এর মধ্যেই চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও খেলাধুলা। ক্লাস চলাকালে ইটভাটায় যাওয়া- আসা লরি ও ট্রাকের বিকট শব্দে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কাছাকাছি অন্য কোন বিদ্যালয় না থাকায় বাধ্য হয়ে সন্তানদের এমন পরিবেশেই পড়াতে হচ্ছে অভিভাকদের।

স্থানীয়রা জানান, ইটভাটার মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় বন্ধ হচ্ছে না ইটভাটার কার্যক্রম। স্থানীয় বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, ইটভাটার জন্য গাছে ফল ফলান্তি হয় না। ধোঁয়া, রাবিশ ও ধুলায় বাড়ি ঘর ও শিশুদের ক্ষতি হচ্ছে। ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া জানায়, ধোঁয়া,আর ধুলোবালিতে আমাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ৫ম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা টিফিন খেতে পারি না ধুলার জন্য। গাছের ফলও নষ্ট হচ্ছে। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুর বলেন, শুধু পাশ ঘেঁষেই ইটভাটা তৈরি করেছে এমন না, স্কুলের জমিও দখল করে রেখেছে ইটভাটার মালিক। বারবার তাদেরকে বলার পরও তারা আমাদের জমি ফিরিয়ে দিচ্ছে না। কালো ধোঁয়া, পোড়ামাটির গন্ধ, ধুলা ময়লা তো আছেই। পাঠদানে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

ইকো ব্রিক্স এর প্রোপ্রাইটর রাকিবুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ইটভাটাকে লাইসেন্স দেয় না। লাইসেন্স ছাড়া ভাটা চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন সিস্টেমটাই এমন, আমার একার দ্বারা সিস্টেম পরিবর্তন হবে না। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, আইন অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ইটভাটা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। আমি এ উপজেলায় নতুন

যোগদান করার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ইটভাটা রয়েছে কিনা আমার জানা নেই। গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া নাজনিন বলেন, আজকেই বিষয়টি আমি জানতে পারলাম। পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ময়মনসিংহ বিভাগীয় উপ-পরিচালক রুবেল মাহমুদ জানান, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো।

 

মো.হুমায়ুন কবীর/এমকে

 


মন্তব্য
জেলার খবর