রংপুরের কাছে হেরে বিপিএলের এবারের আসর থেকে বিদায় নিল ফরচুন বরিশাল। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) এলিমিনেটর ম্যাচে রংপুরের কাছে ৪ উইকেটে হারল সাকিবের বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করে ৩ উইকেটে ১৭০ রান করে বরিশাল। জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে সে রান তুলে ফেলে রংপুর।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে বরিশাল। ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ আন্দ্রে ফ্লেচার ঝড়ো শুরু করেন। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে বরিশালের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৪৬ রান। বড় স্কোরেরই ইঙ্গিত দিচ্ছিল দুই ওপেনার। কিন্তু তখনই বিদায় নেন ফ্লেচার।

ফ্লেচারের বিদায়ের বরিশালের স্কোরবোর্ডে ভাটা পড়েনি। রানের চাকা সচল রাখেন মাহমুদুল্লাহ ও মিরাজ। ১১৫ রানের মাথায় আউট হন মাহমুদুল্লাহ। ব্যক্তিগত ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদুল্লাহ।

রিয়াদের বিদায়ের পর আউট হন মিরাজও। ব্যক্তিগত ৬৯ রান করে বিদায় নেন এই ডানহাতি অলরাউন্ডার। দুই সেট ব্যাটার হারালেও থামেনি বরিশাল। করিম জানাত ও ভানুকা রাজাপাকশের ব্যাটে ভর করে বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় বরিশাল। রংপুরের হয়ে শানাকা দুটি ও রকিবুল একটি উইকেট নিয়েছেন।

রংপুরের সামনে ১৭১ রানে বড় লক্ষ্য। জয়টা বেশ কঠিন স্বাভাবিকভাবেই। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই হোঁচট খায় রংপুর। নাঈম শেখকে কোনো করতে না দিয়েই সাজ ঘরে ফেরান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। নাঈমের বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন দুই ব্যাটার শামীম পাটোয়ারি ও রনি তালুকদার। শুরুতে উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে স্কোরবোর্ডে ৫৫ রান তুলে জয়ের ইঙ্গিত দেয় রংপুর।

দলীয় ৬১ রানে ফের উইকেট হারায় রংপুর। ২৯ রান করে আউট হন ওপেনার রনি তালুকদার। এরপর রংপুর অধিনায়ক সোহান দুর্দান্ত খেলতে থাকা ব্যাটার শামীমকে নিয়ে জবাবটা ভালো মতোই দিচ্ছিল সোহান। ফের একবার ছন্দপতন। দলীয় ৯৬ রানে সাকিবের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে মাঠ ছাড়েন সোহান।

সোহানের বিদায়ের পর ক্যারিবীয় ব্যাটার নিকোলাস পুরানকে নিয়ে ধরে খেলতে থাকে শামীম। তবে পুরানও পারেনি নামের প্রতি সুবিচার করতে। দলীয় ১২২ রানে খালেদের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পুরান। এরপর দাসুন শানাকাকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্ট করে শামীম। তবে দুর্দান্ত খেলতে থাকা শামীমের বিদায়ে বড় ধাক্কা খায় রংপুর। ৫১ বলে ৭১ রান করে আউট হন শামীম।

এরপর লোয়ার অর্ডারে মেহেদি ও শানাকা মিলে দলকে জেতানোর চেষ্টা করে। খেলা এতটাই শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে ওঠে যে, শেষ ওভারে জয়ের জন্য রংপুরের দরকার ছিল ৮ রান। শেষ ওভারের চাপ সামলে ৩ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে রংপুর।

বরিশালের হয়ে সাকিব দুটি, রাব্বি দুটি ও খালেদ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। এ জয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করল রংপুর। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলা সিলেট-কুমিল্লার মধ্যে পরাজিত দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফরচুন বরিশাল : ২০ ওভারে ১৭০/৩ (মিরাজ ৬৯, ফ্লেচার ১২, মাহমুদুল্লাহ ৩৪, করিম ৩৩*, রাজাপাকশে ১৭*; রকিবুল ৪-০-৩২-১, মুজিবুর ৩-০-১৯-০, হাসান ৪-০-৪৪-০, ব্রাভো ৪-০-২৯-০, মেহেদি ২-০-২৩-০, শানাকা ৩-০-২৩-২)।

রংপুর রাইডার্স : ১৯.৩ ওভারে ১৭২/৬ (নাঈম ০, রনি ২৯, শামীম ৭১, সোহান ১৮, পুরান ৫, শানাকা ১৬*, ব্রাভো ২, মেহেদি ১৮*; সাকিব ৪-১-২৭-২, প্রিটোরিয়াস ৩-০-৩২-০, মিরাজ ২-০-২৭-০, সানজামুল ২-০-১৪-০, কামরুল ৩.৩-০-৩৩-২, করিম ১-০-১২-০, খালেদ ৪-০-২৪-২)।

ফল : রংপুর ৪ উইকেটে জয়ী।