মাশরাফি বিন মর্তুজার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ফাইনালে উঠেছে সিলেট স্টাইকার্স। প্রথমে ব্যাট করে রংপুরকে ১৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্য দেয় সিলেট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৬৩ রানে থামে রংপুর। ফলে ১৯ রানের জয় পায় সিলেট। এ জয়ের ফলে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠল সিলেট।
এদিন টস ভাগ্য পক্ষে ছিল না মাশরাফিদের। রংপুরের আমন্ত্রণে প্রথমে ব্যাট করতে নামে সিলেট। শুরু থেকেই ঝড়ো ইনিংস খেলতে থাকে সিলেট। এদিন সব ব্যাটাররের ব্যাট থেকেই রান আসে। কেবল দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। তিনে নামা মাশরাফির ব্যাটেও ভালো রান আসে। ১৬ বলে ২৮ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন তিনি। নাজমুল হাসান শান্তর আউটের পর ব্যাটে নামেন মাশরাফি।
মেহেদী হাসানের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন শান্ত। তবে আম্পারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ছিলেন না মোটেও। ক্রিজে মাশরাফিকে অভিযোগ জানাতে দেখা যায় তাকে।
মাঝে ১০ রানের মধ্যে রায়ান বার্ল, মাশরাফি ও মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারানোর পর মনে হচ্ছিল, আবারও কিছু রান কম করার আক্ষেপে পুড়তে হবে সিলেটকে। থিসারা পেরেরা ও জর্জ লিন্ডা অবশ্য শেষটা করেন ভালোভাবেই, দুজন মিলে ২৫ বলে করেন ৪২ রান। শেষ ৪ ওভারে সিলেট তোলে ৪১ রান, শেষ ৭ ওভারে আসে ৮১ রান।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বেশ অসুবিধায় পড়ে রংপুর। পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ৩৭ রান তোলে। এ রান তুলতেই তারা হারায় স্যাম বিলিংস ও আগের ম্যাচের নায়ক শামীম হোসেনকে। তবে নিকোলাস পুরানের ১৪ বলে ৩০ রানের ক্যামিওতে সেসব পুষিয়ে দেয় রংপুর। এরপর তাদের টানেন রনি তালুকদার ও নুরুল হাসান। ৪০ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন।
খেলার যখন আর ৬ ওভার বাকী, রংপুরের তখন প্রয়োজন ৬৩ রান। বেশ কঠিন সমীকরণ। তবে টি-টোয়েন্টি ফরমেটে অসম্ভব ছিল না। ম্যাচের ১৭তম ওভারে বল করতে এসে রুবেল দেন ১৭ রান। ম্যাচ যেন উল্টে যায়। হারাটা সময়ের ব্যবধান হয়ে যায় সিলেটের জন্য।
খেলার আর বাকী ৩ ওভার। ক্রিজে তখন রনি ও নুরুল হাসান। দুই সেট ব্যাটার থাকায় ভরসা পাচ্ছিল রংপুর। তবে ম্যাচের ১৮তম ওভারেই বদলে যায় গল্পটা। জয়ের জন্য রংপুরের দরকার ৩৩ রান। হাতে আছে ৭ উইকেট। বলে আসেন তানজিম হাসান। ক্যাচ তুললেন নুরুল, উইকেটকিপারের মিস ফিল্ডিংয়ে রান নিতে গিয়ে রানআউটের ফাঁদে পা দিলেন রনি।
পরের ওভারে আসেন লুক উড। তার ওভারে আউট হন মেহেদী হাসান ও ডোয়াইন ব্রাভো। এবার ম্যাচটা ফসকে গেল রংপুরের হাত থেকে। যে ম্যাচটা হারতে বসেছিল সিলেট, সেই ম্যাচেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে সিলেট। শেষ অবদি ১৯ রানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল মাশরাফিরা। এ নিয়ে পাঁচবারের মতো ফাইনাল খেলছে সিলেট।
স্কোরবোর্ড:
সিলেট স্ট্রাইকার্স : ২০ ওভারে ১৮২/৭ (হৃদয় ২৫, শান্ত ৪০, মাশরাফী ২৮, জাকির ১৬, বার্ল ১৫, মুশফিক ৬, পেরেরা ২১, লিন্ডা ২১*, তানজিম ০; মেহেদি ৪-০-২৫-১, রাকিবুল ২-০-১৯-০, হাসান ৪-০-৩৪-২, ব্রাভো ৪-০-৩১-১, রবিউল ২-০-২৩-০, শানাকা ৪-০-৪৫-২)।
রংপুর রাইডার্স : ১৬৩/৮ (রনি ৬৬, বিলিংস ১, শামীম ১৪, পুরান ৩০, সোহান ৩৩, শানাকা , শেখ মেহেদি ২, ব্রাভো ০, রবিউল ০* ; লিন্ডা ৪-০-৩৩-০, তানজিম ৪-০-১৯-২, রুবেল ৪-০-৪২-২, উড ৪-০-৩৪-৩, মাশরাফী ৩-০-২৪-০, বার্ল ১-০-১১-০)।
ফল : সিলেট স্ট্রাইকার্স ১৯ রানে জয়ী।