দাম নিয়ে কারসাজি থাকায় কুরবানির ঈদ ঘিরে বেসামাল হয়ে উঠছে মসলার বাজার। সরবরাহ ঠিক থাকলেও চড়া দামে মসলা কিনতে বাধ্য হচ্ছে সাধারণ ভোক্তারা। এতে তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বেশি দামে কেনা, তাই বেশি দামে বেচা- এমন অজুহাত দেখিয়ে বাড়ানো হচ্ছে মসলাজাতীয় সব ধরনের পণ্যের দাম। পরিস্থিতি এমন জায়গায় ঠেকেছে- এক কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনতেও ক্রেতাকে এখন ৫০ টাকার বেশি খরচ করতে হচ্ছে, আদা কিনতে লাগছে ৪শ’ টাকা।
প্রাপ্ত তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে মসলার বাজারে হলুদ, জিরা, এলাচ, লবঙ্গ, ধনে ও তেজপাতার দাম কেজিতে বেড়েছে নূন্যতম ৫০ আর সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা।
বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজারের দর বলছে, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় মাস আগে এ পেঁয়াজের দাম ছিল ৩৫-৪০ টাকা। আদা প্রতি কেজি আমদানিরটা ৩৫০ টাকা ও দেশিটা ৪০০ টাকা দরে কেনা বেচা হয়েছে। আগে আমদানির আদার দর ছিল ২৫০ টাকা। আগে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকা, প্রতি কেজি ২ হাজার ২০০ টাকার এলাচ এখন ২ হাজার ৬০০ টাকা, লবঙ্গ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকায়, অথচ আগের দর ছিল ১ হাজার ৫০০ টাকা। একই ভাবে মাসখানেক আগে ৬৫০ টাকা দরের জিরার কেজি এখন ৯০০ টাকা। ১২০ টাকা দরের ধনিয়ার গুঁড়া বিক্রি হয় ১৯০ টাকায়। গোল মরিচের দামও বেড়েছে, বিক্রি হয়েছে এক হাজার টাকা, আগে ছিল ৯১০ টাকা। এছাড়া কেজিতে ৫০-৬০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি মেথি ১২০-১৬০, আলু বোখারা ৪৮০-৫০৪, কিশমিশ ৪৪২-৪৭০ এবং পাঁচফোড়ন ১৫২-২১০ টাকায় বিক্রি হয়।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ঈদ ঘিরে কতিপয় ব্যবসায়ীর শক্তিশালী সিন্ডিকেট মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। কিন্তু বাজার তদারকি সংস্থাকে নিশ্চুপ ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে। তদারকি সংস্থাগুলোর তৎপরতা জোরদার করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, কোনো অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দিতে হবে। এতে পণ্যের দাম কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করেন তিনি।
কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা একজন বলেন, ইচ্ছা হলেই বিক্রেতারা বাড়তি দামে পণ্য বিক্রি করছে। কুরবানির ঈদ ঘিরে সব ধরনের মসলার দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মসলার খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মসলার বাজার আমদানিনির্ভর। আমদানিকারক বড় বড় ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়েছেন। তাই সব জায়গায় দাম হুহু করে বেড়ে যাচ্ছে।
আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং রেট দ্বিগুণ বাড়ায় আমদানির মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। বাজারে পর্যাপ্ত দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলেও ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ ছিল। তাই ঈদের দাম বেড়ে যায়, এখন কমতির দিকে। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে চীন ও মিয়ানমার থেকে আদা আমদানি হচ্ছে। এতে দাম বাড়ার আশঙ্কা কম বলে মনে করছেন তারা।
বিডি/ই/এমকে