পঞ্চগড়ে লোকসান গুনছেন চাপাতার ক্ষুদ্র চাষীরা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
০৯ জুলাই ২০২৩

পঞ্চগড়ে কাঁচা চাপাতার দাম কমে গিয়ে তলানিতে ঠেকেছে। পাতা বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদনের খরচ উঠে আসছে না চাষীদের। ফলে জেলার ক্ষুদ্র চাষীরা লোকসান গুনছেন এ আবাদে।

 

জেলা প্রশাসন কেজি প্রতি কাঁচা চা পাতার দর ১৮ টাকা নির্ধারন করে দিলেও চা কারখানা কর্তৃপক্ষ ক্রয় করছে ১২-১৫ টাকা। এর সঙ্গে ১৫-৫০ শতাংশ ঘাটতি (উচ্ছিষ্ট) বাদ দেওয়া হচ্ছে। অথচ এবার প্রতি কেজি কাঁচা চাপাতা উৎপাদন খরচ হয়েছে - টাকা, কাটতে -. টাকা, গাড়ী ভাড়া ৭০ পয়সা এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ফলে খরচ তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চাষীদের। সম্প্রতি সরেজমিনে চাষীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানান গেছে।

বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড় অফিস সুত্র জানায়, জেলায় ১০ হাজার ২৩৯ একর জমিতে চা চাষ করা হচ্ছে। নিবন্ধিত চা-বাগান হাজার ৩৬৮ টি, অনিবন্ধন চা বাগান হাজার ৯৭০ টি রয়েছে। আর নিবন্ধনের বাইরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চা বাগান রয়েছে অনেক। চা প্রক্রিয়াজাতের জন্য কারখানা চালু রয়েছে ২৭ টি। ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত ৪০ লাখ ৭৫ হাজার কেজি চা উৎপাদন হয়েছে।

মালিপাড়া এলাকার ক্ষুদ্র চা চাষী সুজন আলী জানান, মৈত্রী চা কারখানায় পাতা দিয়েছি দাম প্রতি কেজি ১৫ টাকা ধরে। এর সঙ্গে ৪০ শতাংশ কর্তন করা হয়েছে। এতে যে টাকা পেয়েছি, তাতে পাতা উৎপাদনের খরচ উঠে আসেনি। ঘর থেকে ভর্তূকি দিতে হচ্ছে। কার কাছে গেলে চাপাতার ন্যায্য দাম পাবো প্রশ্ন এ চাষীর?

মিরগড় এলাকার ক্ষুদ্র চা চাষী বাসেত জানান, আড়াই বিঘা জমিতে হাজার ৬০০ কেজি চাপাতার উৎপাদন খরচ হয়েছে ২৯ হাজার টাকা। ৩০ শতাংশ কর্তন করে থাকে হাজার ৮২০ কেজি। ১৫ টাকা হিসেবে দাম আসে ২৭ হাজার ৩০০ টাকা।বাকী টাকা ঘর থেকে ভর্তূকি দিতে হয়েছে।

উত্তরা গ্রীণ টি লিমিটেডের গ্রীণ লীপ ম্যানেজার রিয়াদ, নর্থ বেঙ্গল চা কারখানার ইনচার্জ মাসুদ খানসহ একাধিক কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, চাপাতা চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। এছাড়া চাষীরা ডালপালাসহ চাপাতা মিলে নিয়ে আসায় কর্তন করা হয়।

বাংলাদেশ চা বোর্ড পঞ্চগড়ের উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আমির হোসেন জানান, চাষী সাড়ে - পাতা পর্যন্ত দেওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে ডালপালাসহ কারখানায় দিচ্ছে। এতে উৎপাদিত চায়ের মান খারাপ হচ্ছে। অকশন সেন্টারে দাম কম মিলছে, এ জন্য দাম কম। শুধু কৃষক না কারখানা কর্তৃপক্ষেরও দোষ আছে। এরা চোরাই মার্কেটে চাপাতা বিক্রি করছে। তবে পঞ্চগড়ে অকশন সেন্টারটি চালু হলেই কৃষক বুঝতে পারবে চায়ের দাম কত। চায়ের মান উন্নত করতে না পারলে দাম আরো খারাপ হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে একটা মনিটরিং টিম আছে। বার বার বলেছি, আশ্বাস দিচ্ছে। কিন্তু, কোন কাজ হয় না।

 

বিডি/সম্রাট/সি/এমকে


মন্তব্য
জেলার খবর