পশ্চিমাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সামরিক দিক থেকে বেশ উন্নতি করছে ইরান। সম্প্রতি খোররামশাহ নামে একটি ব্যালিস্টক ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা করেছে দেশটি। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য মতে, ১৪৫টি দেশের মধ্যে দেশটির অবস্থান ১৭।
১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর শিয়া পন্থীরা দেশটির ক্ষমতায় আসে। শুরু থেকেই পশ্চিমাদের রোশানলে পড়ে দেশটির। একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলা করে আসছে তারা। এসব সত্ত্বেও দেশটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি করেছে। পশ্চিমারা ইরানকে রীতিমত সমীহ করে চলছে।
পশ্চিমারা বিশেষ করে আমেরিকা ইরান পরমানু অস্ত্র তৈরি করছে বলে অভিযোগ করে আসছে। এজন্য ইরানের ওপর একের একর পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে যুক্রাজ্য।
তবে তাদের এ অভিযোগ বারবার অস্বীকার করে আসছে ইরান। এসব পশ্চিমা মিডিয়াগুলোর মনগড়া গল্প বলে পাল্টা অভিযোগ দেশটির।
বহুদিন ধরে পরমাণু কর্মসূচী চালিয়ে আসছে ইরান। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ উদ্দেশে্য ব্যবহারের জন্যই তাদের এ কর্মসূচী।
গত বছরের (২০২২) নভেম্বরে জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি তথা আইএইএ জানায়, চুক্তির থেকে সরে গিয়ে যাওয়ার পর ইরান নিজেদের ফোরদো ভূগর্ভস্থ পরমাণু কেন্দ্রে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ শুরু করেছে এবং দিনদিন পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, ‘ইরান কয়েকটি পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করে ফেলেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তেহরান এখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করেনি। তবে যেকোনো সময় তৈরি করে ফেলতে পারে। অস্ত্র তৈরি করা ঠেকাতে পশ্চিমা দেশগুলোর এখনই উদ্যোগ নেয়া উচিৎ।’
গ্রোসি আরও বলেন, ‘৯৯ শতাংশের বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম থেকে পরমাণু অস্ত্র করা যায়। ইরান ৭০ কিলোগ্রাম (১৫৪ পাউন্ড) ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করে ফেলেছে।’
গত মাসে (১১ জুন) ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেন, ‘তেহরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে পশ্চিমারা চাইলেও ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা থেকে আটকাতে পারবে না।’
খামেনি আরও বলেন, ‘তেহরানের পারমাণবিক অস্ত্র সম্পর্কে কথাবার্তা মিথ্যা এবং তারা (পশ্চিম) এটা জানে’। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে পারমাণবিক অস্ত্র চাই না। অন্যথায় তারা এটি বন্ধ করতে পারত না।’
ইরান অস্বীকার করলেও আমেরিকা তার অবস্থান থেকে একটুও সরে আসেনি। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মার্কিন গোয়েন্দারা। গত সোমবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত অফিস অব দ্য ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স-এর ওই রিপোর্টে ইরানি কর্মকর্তাদের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করা হয়েছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনির বক্তব্য যেন পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে এ রিপোর্টে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরান যেকোনো সময় পরমাণু অস্ত্র বানাতে সক্ষম। কিন্তু তারা বানাচ্ছে না।
আরআই