ভারতের মণিপুর রাজ্যে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ঘটনায় প্রধান অভিযুক্তসহ
চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।
দেশটির মণিপুর রাজ্যে প্রায় তিন মাস ধরে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চলছে। মূলত মেইতেই
ও কুকি গোষ্ঠীর রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষে অন্তত দেড়শ’ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ৮শ’র
বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। রাজজুড়ে চলা সংঘর্ষে ২৯০টিরও বেশি গ্রামের সাড়ে চার হাজারেরও
বেশি ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
বুধবার (১৯ জুলাই) রাতে প্রথমবারের মতো দুই নারীকে প্রকাশ্যে উলঙ্গ করে
গ্রামের রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। বিবস্ত্র করে ঘোরানোর আগে তারা গণধর্ষণের
শিকার হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। নারীদের উলঙ্গ করে ঘোরানো ব্যক্তিরা এতোটাই হিংস্র
ছিল যে, নির্যাতের শিকার এক নারীর ভাই তাদের বাধা দিলে তাকে হত্যা করা হয়। ওই তরুণের
বয়স ১৯ বছর ছিল।
এ ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা ভারত। দেশের জনগণ ক্ষোভে
ফেটে পড়েছে। এতে করে প্রবল ক্ষোভের মুখে পড়েছে মোদি সরকার। বিরোধী দলগুলো বিজেপিকে
এক হাত নিয়েছে। শুধু তাই নয়, এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারের উচিত
এখনই ব্যবস্থা নেয়া। না হলে সুপ্রিম কোর্ট পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।’
জিনিউজের এক খবরে বলা হয়েছে, দুই নারীকে নগ্ন করে হাঁটানোর ভিডিও প্রকাশ্যে
আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নাম হুইরাম হেরোদাস।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও দেখে ৩২ বছর বয়সী ওই যুবককে চিহ্নিত করা হয়। পরে তাকে
থৌবাল জেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, হেরোদাস এক নারীকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ওই ভিডিও দেখেই একে একে আরো তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে সর্বাত্মক অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে মণিপুর
পুলিশ।
জানা যায়, বহুল আলোচিত এ ঘটনাটি মূলত মে মাসের। মণিপুরে গত ৩ মে সহিংসতা
শুরু হয়। এর পরের দিন অর্থাৎ ৪ মে ঘটনাটি ঘটে। এর ৭৭ দিন পর বুধবার রাতে ঘটনার একটি
ভিডিও প্রকাশ্যে আসে।
ওই ভিডিওয় দেখা যায়, একদল যুবক গ্রামের রাস্তা দিয়ে সম্পূর্ণ নগ্ন দুই
নারীকে হাঁটিয়ে ধানখেতে নিয়ে যাচ্ছে। হাঁটতে হাঁটতেই যুবকদের কয়েকজন দুই নারীকে যৌন
নিগ্রহ করছেন। ওই দুই নারী কাঁদছেন এবং তাদের ছেড়ে দেয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছেন।
আরআই